পাতা:প্রবাসী (সপ্তম ভাগ, প্রথমাংশ).djvu/২১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

९० কুপের উপরে আসিয়া পড়ে। ইহার ক্ষমতা বাস্তবিকই অৰ্জুন তুল্য। . অদৃষ্ঠ-বেধ—একটি বড় জালার মধ্যে চারিটি বিভিন্ন বর্ণরঞ্জিত মৃতভাণ্ড রক্ষা করিয়া সেই জালাটিকে দড়ির সাহায্যে টাঙাইয়া দেওয়া হয় । দড়িতে পাক দিয়া ছাড়িয়া দিলে জালা দ্রুত ঘুরিতে থাকে। তদবস্থায় জালা মধ্যস্থ যে কোন বর্ণের ভাণ্ড রাণাকে বলিবামাত্র তিনি গুলি চালাইয়া ভাঙিয়া দিতে পারেন, অন্ত গুলি অভগ্ন থাকিয়া যাইবে । ইহা অতি আশ্চর্য্য ক্ষমতা ! চলল্লক্ষ্য-বেধ—একটা কাঠের ঢেরার চারি মুখে চারি বর্ণের চারিটি মৃৎপিণ্ড সংলগ্ন করিয়া সেই ঢের আবৰ্ত্তিত করা হয় ; তখন যে বর্ণের মৃৎপিণ্ড বিদ্ধ করিতে বলা যাইবে, রাণা তাহাই বিদ্ধ করিতে সক্ষম। মৎস্ত-বেধ--৮১০ গজ উচ্চে ঘূর্ণ্যমান কাগজের মৎস্তের প্রতিচ্ছায়া জলে দেখিয়া মৎস্তের চক্ষুবিদ্ধ করিয়া থাকেন। ইহাই দ্রৌপদী-স্বয়ম্বরের মৎস্ত বেধ। রাণা অধিকতর বাহাদুরী দেখাইবার জন্ত দোদুল্যমান বড় একটা তরাজুর দুই পাল্লায় পা দিয়া দাড়াইয়া জলের প্রতিচ্ছায়া দেখিয়া ভ্ৰাম্যমান মৎস্তের চক্ষুবিদ্ধ করিয়া থাকেন। নিজে দোদুল্যমান এবং লক্ষ্য চঞ্চল ; এরূপ অবস্থায় সফলতা বড়ই আশ্চৰ্য্যজনক ! শব্দ-বেধ—বস্ত্রাবৃত করিয়া চক্ষু দৃষ্টিহীন করিয়া চারিটি বিভিন্ন বর্ণরঞ্জিত মৃৎকলসের শব্দ প্রথমে রাণীকে শ্রবণ করান হয় এবং প্রত্যেক শব্দ কোন বর্ণের কলসের তাহ বলিয়া দেওয়া হয় । তৎপরে কলস সকলের স্থান অদল বদল করিয়া রাথিয়া আবার শব্দ শুনান হয়। তখন যে বর্ণের কলসকে বিদ্ধ করিতে বলা যাইবে, "রাণ তাঁহাই বিদ্ধ করিয়া দিবেন। জলন্ত মোমবাতি গুলি মারিয়া নিভাইয়া দিতে পারেন, কিন্তু বাতি গুলির আঘাতে একটু নড়িবেও না। এইরূপ বহুবিধ অদ্ভুত ক্ষমতার পরিচয় তিনি বহুস্থানে প্রদান করিয়াছেন । ইহার পুত্র শুরুসিংহ পিতার উপযুক্ত পুত্র। তিনিও এই সকল প্রকার লক্ষ্যবেধে পিতৃতুল্য পারদর্শী হইয়া ऊँठिंब्रांtछ्न। ইহঁদের উদ্দেশু ভারতের প্রনষ্টবিদ্যা পুনরুজ্জীবিত প্রবাসী । করিয়া সাধারণকে সেই বিদ্যায় শিক্ষিত করা। অর্থাভাবে কোথাও শিক্ষালয় স্থাপন করিতে পারিতেছেন না। আমাদের দেশে ধনকুবেরের অসদ্ভাব নাই। যদি অর্থাভাবে এমন বিদ্যা অধিগত হইবার উপায় থাকিতেও জনসাধারণের আয়ত্ত না হয় তবে ক্ষোভ ও পরিতাপেও এই ক্রটির প্রায়শ্চিত্ত হইবে না। অনেকের ধারণা হইয়াছিল যে আধুনিক যুদ্ধপ্রণালীতে স্থির লক্ষ্য না হইলেও চলে ; কিন্তু বোয়ার ও জাপানীরা সে ভুল ভাঙ্গিয়া দিয়াছে। ইহার বৃত্তান্ত মান্দ্রাজ বোম্বাইয়ের সংবাদপত্রে মধ্যে মধ্যে আলোচিত হয় ; বঙ্গ এ বিষয়ে একেবারে উদাসীন ; ইহা বাংলার পূৰ্ব্বস্বভাবানুরূপ হইলেও বর্তমানে লজ্জার বিষয়। কলিকাতায় তাহার লক্ষ্যবেধ সংবাদ কোন পত্রিকাতেই যথোচিত ভাবে আলোচিত হয় নাই বোধ হয়। রাণা সরতান সিংহের দৃষ্টাস্তামূবৰ্ত্তী অপর লক্ষ্যবেধনিপূণ ঐযুক্ত ললুভাই কল্যাণজী শাহ ১৯৩২ সংবতে জন্মগ্রহণ করেন । বর্তমানে তাহার বয়স ৩২ বৎসর মাত্র। ইনি কাঠিয়াবাড়ের ভাবনগরের অধিবাসী, ইহার বংশ তদেশ প্রসিদ্ধ বৈশুবংশ । ধৰ্ম্মে ইনি শ্বেতাম্বর জৈন। ভাবনগর ংলো-ভাৰ্ণাকুলার গুজয়াতী বিদ্যালয়ে ইনি বিদ্যাভ্যাস করেন। বাল্যকাল হইতেই ইহার শস্ত্রবিদ্যা, কলা, শিল্পকৌশল প্রভৃতির প্রতি অনুরাগ পরিদৃষ্ট হইত। ইনিও রাণা সরতান সিংহের মত রামারণ, মহাভারত ও চারণ কবি বর্ণিত বীরত্ব কথায় উৎসাহিত হইয়া সাধনায় প্রবৃত্ত হয়েন। ৮ বৎসর পূর্বে রাণা সরতান সিংহের অদ্ভূত ক্ষমতা দেখিয়া তিনি সেই আদর্শে উপনীত হইতে সচেষ্ট হয়েন এবং তিনি সফলকাম হইয়াছেন। কায় মনে সাধন করিলে অসাধ্য কিছুই থাকে না । ইনিও মৎস্তবেধ, ভয়ানক বেধ, অদৃশুবেধ, শব্দবেধ প্রভৃতি প্রয়োগে তুল্য নিপুণ । ১৯০৫ সালের অক্টোবর মাসে প্রিন্স অফ ওয়েলসের সমক্ষে লক্ষ্যবেধ কৌশল দেখাইয়া তিনি প্রশংসিত ও সম্মানিত হইয়াছেন। বহু ইংরাজ ও দেশীয় সম্রান্ত লোকের বিস্ময়োৎপাদন করিয়াছেন ; তন্মধ্যে আমাদের দেশপুজ্য শ্ৰীযুক্ত বালগঙ্গাধর তিলক অন্ততম । রাণা সরতান সিংহের প্রয়োগকৌশল হইতে যে-ষে । বিষয়ে ইহঁর পার্থক্য আছে, এ স্থলে সংক্ষেপে তাহাই বর্ণিত