পাতা:প্রবাসী (সপ্তম ভাগ, প্রথমাংশ).djvu/২১৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৪র্থ সংখ্যা । ] অনেক পুস্তক চীনভাষায় অনুবাদ করিয়া থাকেন। এই অধ্যয়ন কাৰ্য্য ভিন্নও তিনি নানা গৃহকার্ষ্যে মন দিয়া থাকেন। সম্রাট বাদ্যযন্ত্রে সিদ্ধহস্ত । নানাপ্রকার চীনদেশী বাদ্যযন্ত্র এবং বিলাতী পিয়ানো পৰ্য্যন্ত বাজাইতে পারেন। বাজনার সুর ও তাল বোধ তাহার বিলক্ষণ আছে। ঘড়ি ইত্যাদি সংস্কার কাৰ্য্যে তিনি বিশেষ দক্ষ। প্রকাও ঘড়িগুলি খুলিয়া পুনরায় তাহার ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অংশগুলি যথাস্থানে যোজনা করিতে তিনি বেশ পটু। একবার সম্রাট একটা ঘড়ি নাকি খুলিয় তাহ পুনরায় যোজনা করিতে পারেন নাই,- সেই জন্য বৃদ্ধারাণী তাহার কোন প্রিয় ঘড়ি সম্রাটকে নাড়াচাড়া করিতে দিতে অনিচ্ছুক । সম্রাট কোয়াংশু অতি প্রত্যুষে গাত্ৰোখান করেন। এই অভ্যাস অন্যান্ত আমীর চীনাগণের অভ্যাসের সম্পূর্ণ বিপরীত ! বড় বড় চীনারা প্রায়ই ৮৯টা বেলা না হইলে শয্যাত্যাগ করে না । সম্রাট কখন কখনও রাত্রি ২টার সময় শয্যাত্যাগ করিয়া থাকেন। যখন পূৰ্ব্বপুরুষগণের সপিণ্ডীকরণ বা পাৰ্ব্বন শ্ৰাদ্ধাদি সম্পন্ন করিতে হয়, তখন শেষ রাত্রিতে গ্রীষ্মাবাস পরিত্যাগ করিয়া, পেকিনে পৌছিয়া শ্ৰাদ্ধাদি সম্পন্ন করিয়া পুনরায় অপরাহ্নে গ্রীষ্মাবাসে প্রত্যাবর্তন করিয়া থাকেন। তিনি যুবতী রমণীগণের সঙ্গ ভালবাসেন না। অপর মুন্দরী রমণীগণকে উপেক্ষার চক্ষে দেখিয়া থাকেন । রাজপ্রাসাদে র্তাহার প্রিয়পাত্রের সংখ্যা অধিক নাই। তিনি বুদ্ধিমান ব্যক্তিগণের বিশেষ সম্মান * করিয়া থাকেন । -- সম্রাট অপেক্ষা সম্রাজ্ঞীর সন্মান রাজপুরীতে অধিক । কেন না মহারাণী সম্রাটের “পূৰ্ব্বপুরুষ” (ancestor) at গুরুজন বলিয়া সৰ্ব্ব বিষয়ে তিনি অগ্রগণ্য। পূৰ্ব্বে উল্লেখ করা হইয়াছে মহারাণী সিংহাসনে উপবেশন করিলে সম্রাট তাহার পাশ্বে নিমাসনে উপবেশন করিয়া থাকেন । যখন দুইজনে একত্র কোথায়ও গমন করেন, তখন সম্রাট বৃদ্ধারাণীর শিবিকার সঙ্গে সঙ্গে পদব্রজে গমন করিয়া থাকেন। সম্রাঙ্গীর সম্মুখে তাছাকে দণ্ডায়মান থাকিতে হয়। কেবল আহায়কালে একসঙ্গে টেবিলপার্থে উপবেশন করিয়া আহার कब्रि थोरक्न । - পেকিন রাজপুরী। ক ইশ থাকে। ইং জি তিনিলি ভাল হইতে እbጫ সম্রাজ্ঞী যখন একাকিনী আহার করেন, তখন র্তাহার চামচ, ভোজনপত্রি, খাদ্যপাত্রের আবরণ, আহাৰ্য্য মুখে তুলিবার কালাফ ( Chop stick ) প্রভৃতি রৌপ্যময়, কিন্তু সম্রাটের সঙ্গে আহার করিতে হইলে স্বর্ণময় দ্রব্যসকল ব্যবহার করা হইয়া থাকে। সম্রাটের প্রাসাদের দিকে তাহার অন্তঃপুরের বাহিরের অপর কোন রমণী দৃষ্টিপাত করিতে পারেন না, এমন শুনা যায় । সম্রাট নিজে উদ্যানে ভ্রমণকালে অপর কোন মহিলা র্তাহার সঙ্গে থাকে না। যদি কখনও নবীন সম্রাজ্ঞী তাহার সঙ্গে যাইয়া থাকেন তাহা হইলে তাহার পরিচারিকাগণ সঙ্গে সঙ্গে গমন করেন। যখন বিদেশী রাজন্তবর্গের প্রতিনিধিগণকে দরবার গৃহে আহবান করা হয়, বৃদ্ধারাণী সেই দরবারকাৰ্য্য সম্পন্ন করিয়া থাকেন, কিন্তু সম্রাট নাকি এ সকল বড় ভাল বাসেন না। ইহার কারণ জানা যায় নাই। তবে কি তিনি বিদেশীকে ঘৃণা করেন ? কে বলিতে পারে ? নবীন সম্রাজ্ঞী । বর্তমানে পেকিন রাজপুরীতে মহিলাগণ মধ্যে বৃদ্ধারাণীর নিয়েই নবীন সম্রাজ্ঞীর পদমর্য্যাদা । তিনি অতি বিনয়ী সদ্ভাবসম্পন্ন এবং পরম সুন্দরী রমণী। ইনি মাষ্ণু সৈনিক পরিবারের ডিউক চাও নামক একজন জেনেরালের কন্যা। উক্ত জেনারাল বৃদ্ধ মহারাণীর এক ভ্রাতা । তাহার মাতাও প্রাচীন রাজবংশের এক মহিলা ছিলেন। একদিকে সম্রাট যেমন বৃদ্ধারাণীর দেবর পুত্র ও ভগ্নী পুত্র, অপর দিকে নবীন সম্রাজ্ঞী বৃদ্ধারাণীর ভ্রাতুপুত্রী। রাজপুর মধ্যে এই তরুণী সম্রাঙ্গীর, তাহার পিসীমা ও শাশুড়ীর নিকট বেশ প্রতিপত্তি আছে । এবং ইনিও চীন ভাষায় একজন সুশিক্ষিত রমণী । দেশের রীতি অনুসারে বালিকাবস্থায় সম্রাটের সহিত র্তাহার পরিণয় সম্বন্ধ স্থির হইয়াছিল। কিন্তু উভয়ে বয়ঃপ্রাপ্ত না হইলে বিবাহ হইবার নিয়ম না থাকায় উভয়কেই সময়ের জন্য অপেক্ষা করিতে হইয়াছিল। তাই ১৮৮৯ খৃঃ সম্রাট নিজহস্তে রাজ্যশাসন ভার লইবার এক সপ্তাহ পূৰ্ব্বে র্তাহার বিবাহ হয়। এই রাণী সম্রাট অপেক্ষ তিন বৎসরের रंध्रांग्खलैिः । নব রাণীর চাল চলন বৃদ্ধারাণীর সদৃশ। ইনি উচ্চে পাচ ফুটের কম। হস্ত পদগুলি ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ও অতি সুন্দর।