পাতা:প্রবাসী (সপ্তম ভাগ, প্রথমাংশ).djvu/২৪২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৪র্থ সংখ্যা । ] কোন পরিবারের ਾਂ স্ত্রীস্বত্বাধিকারের দায় হইতে সহজে নিষ্কৃতিলাভ করিবার জন্ত এইরূপ উপায় অবলম্বন করে, এবং “সতী”-আখ্যা প্রাপ্ত বিধবার পুণ্যকৰ্ম্মের পুরস্কার স্বরূপ, চিতা-স্থানে গিয়া তাহার লোকাস্তরিত আত্মার পূজা করে । মহামুভব মোগলসম্রাট আকৃবর এই প্রথা রহিত করিবার জষ্ঠ বৃথা প্রয়াস পাইয়াছিলেন। শেষে এই যশের ভাগী হইলেন, উদারনৈতিক লর্ড বেটিঙ্ক কিংবা স্ত্রীস্বত্বাধিকারের প্রবর্তক রামমোহন রায় র্যাহার অবিশ্রান্ত বাদপ্রতিবাদে ও উত্তেজনাবাক্যে উত্তেজিত হইয়া ইংরাজ সরকার এই বিষয়ে হস্তক্ষেপ করিলেন । Ponce-Pilateর মত ভারতের ইংরাজ-কর্তৃপক্ষ প্রায়ই এইরূপ বলিয়া থাকেন, “এ হিন্দু ব্যাপার,—ইহাতে হস্তক্ষেপ করা দূরে থাক, কড়ে আঙ্গুলের অগ্রভাগটি পর্য্যস্ত যেন না দেওয়া হয়।” কিন্তু ১৮২৯ খৃষ্টাব্দে, উদার রাজনীতির প্রাচুর্ভাব হইল ; ইহাই ভারতের পরম সৌভাগ্য । যে পরিবারে সতীদাহ হইবে সেই পরিবার এবং যাহারা ইহাতে সাহায্য করিবে সেই সব লোক দণ্ডিত হইবে, সেই সময়ে এইরূপ আইন জারী হইল। কিন্তু লোকে ইহার প্রতিরোধী হইল। বিশেষত আমি পূৰ্ব্বেই বলিয়াছি, যে বলিদানের পাত্র, সে নিজেই ইহার প্রতিকূলে দণ্ডায়মান হইল ;–এই আইনের দ্বারা বীরত্বের দুর্লভ অধিকার হইতে বঞ্চিত হইবে বলিয়া সে দুঃখিত হইল । একজন ইংরাজ রাজপুরুষ যে একটি অদ্ভূত ঘটনার বিবরণ দিয়াছেন, তাহা হইতেই আমার কথা সপ্রমাণ হইবে –“মঙ্গলবার ২৪শে নবেম্বর ১৮২৯, এই প্রদেশের কোন সম্লান্ত বৰ্দ্ধিষ্ণু ব্ৰাক্ষণ-পরিবার হইতে একটা দরখাস্ত পাইলাম। আজই প্রাতে উমেদ সিং উপাধ্যায় নৰ্ম্মদাতীরে মরিয়াছে ; তাহার বৃদ্ধ পত্নী, তাছার সহিত চিতারোহণ रुब्रिबांद्र अन्नमङि कांब्र। * * * श्रांभि उग्न cनशाहेशांभ, যে কেহ সতীদাহে সাহায্য করিবে সে দণ্ডিত হইবে * * * কিন্তু সেই রমণী অন্নজল স্পর্শ না করিয়া নদীতীরেই বসিয়া রছিল। তাহার পরদিন, তাহার মৃতদেহ ভস্মসাৎ হইল , সতীদাহ দেখিবার জন্ত এই চিতার সম্মুখে অনেক লোক আসিয়া জমিয়াছে। তখন সেই বৃদ্ধ রমণী, নৰ্ম্মদ-নদী সমসাময়িক ভারত । २०S গর্ভোখিত একটি নগ্ন শৈলের উপর বসিয়া আছে ; পানাহার পরিত্যাগ করিয়াছে ; দিনমানে প্রখর সূর্য্যের উত্তাপ, রাত্রিকালে উৎকট শীত-সমস্তই সহ করিতেছে । তাহার স্বন্ধে শুধু একখানি পাতলা কাপড়। তাহার মনের সঙ্কল্প শীঘ্র কার্য্যে পরিণত করিবার জন্য, মাথায় একটা লাল মোট পাগৃড়ী (ধাপ ) বাধিল । এবং তাহার হাতের বলয় ভাঙ্গিয়া ফেলিল। ইহাতে করিয়া সে তাহার জাতিকুল হইতে চিরকালের মত বিচ্ছিন্ন হইল—সংসারের সম্বন্ধে ইহা একপ্রকার মৃত্যু বলিলেই হয়। ইহার পরেও সে যদি বাচিতে ইচ্ছা করে, সে আর ঘরে ফিরিয়া যাইতে পারবে না । সে বলিয়া উঠিল -—“আমার আত্মা উমেদ সিং উপাধ্যায়ের সহিত রহিয়াছে ; এবং আমার ভস্ম উইারই ভষ্মের সহিত এই খানে মিশ্রিত হইবে । বিবাহবেদিকার নীচে আমাদের উভয়ের ভষ্ম একসঙ্গে মিশিয়াছে, —আমি যেন দিব্যচক্ষে দেখিতে পাইতেছি।” এই কথাগুলি এরূপ স্বরে বলিয়াছিল, এবং সেই সময়ে তাহার এরূপ একটা মুখের ভাব হইয়াছিল যে সেই দৃশুটি আমার মনে এখনও অঙ্কিত হইয়া রহিয়াছে।” রাজপুরুষ মৈত্র ভয় দেখাইয় তাহাকে ফিরাইবার জন্ত অনেক চেষ্টা করিলেন। . সে মৃদু হাসিয়া বলিল, “আমার নাড়ী অনেকক্ষণ হইল নিষ্পনা হইয়াছে, আমার আত্মা দেহ হইতে প্রস্থান করিয়াছে ; এখন একটু ভূমিখণ্ড ছাড়া আর আমার কিছুই নাই ;–সেই খানে আমার পতির ভষ্মের সহিত আমার ভস্ম মিশাইব । অগ্নিদাহে আমার কোন কষ্ট হইবে না ; তার যদি প্রমাণ চাও, তবে একটু আগুন জ্বালাও ; ঐ আগুনে আমার হাত পুড়িবে, অথচ আমার একটুও কষ্ট হইবে না” * * * বাস্তবিকই তাহার নাড়ীর ‘ স্পন্দন আর জানা যাইতেছিল না। “অবশেষে বেল দ্বিপ্রহরের সময় আমি অনুমতি পাঠাইয়া দিলাম—সে সন্তুষ্ট হইল। তিন ঘটিকার পূর্কেই স্নানের অনুষ্ঠান শেষ হইল । * * * স্নানের পর একটা পান চাহিল ; পান চিবাইয়া উঠিয়া দাড়াইল ; এবং এক 棒 兼 帐 হস্ত তাহার জ্যেষ্ঠ পুত্রের স্কন্ধে এবং অপর হস্ত তাহার ভ্রাতুপুঞ্জের স্বন্ধে স্থাপন করিয়া, ধীরে ধীরে চিতাগ্নির দিকে অগ্রসর হইল। আমি শান্ত্রি পাহার রাখিয়াছিলাম।