পাতা:প্রবাসী (সপ্তম ভাগ, প্রথমাংশ).djvu/২৬২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৪র্থ সংখ্যা । ] পশমের কাপড়ের আমদানী খাতে প্রায় কুড়ি লক্ষ টাকা कम श्हेब्राह्छ । ● ১৯০৫–৬ অফে ১০ লক্ষ ৯৩ সহস্র টাকার জুতা এ দেশে আসিয়াছিল। গত বৎসর ৬ লক্ষ ৪১ টাকায় নামিয়াছে। বাঙ্গালী এখনও প্রায় সাড়ে ছয় লক্ষ টাকার বিলাতী স্কুত লইতেছে। ইহা অপেক্ষ আত্মমর্যাদার অভাবের পরিচয় আর কি হইতে পারে ? বিলাতী জুতা কি এতই ভাল! শ্ৰীচরণ-কমলে দেশী জুতা কি নিতান্তই অশোভন ? বিলাতী জুতা যে ক্রমে উৰ্দ্ধগামী হইতেছে সে দিকে কি এখনো লক্ষ্য নাই ? হায় মূঢ় অধঃপতিত জাতি ? চৈতন্ত কবে হইবে ? : বিদেশী চিনির আমদানী খুব বাড়িয়াছে। কিন্তু খাস ইংলণ্ডের চিনির আমদানী ১৪ লক্ষ ছিল, ১১ লক্ষ হইয়াছে। জৰ্ম্মানীর চিনির আমদানী ১৪ লক্ষ ছিল, ৭৩ লক্ষ হইয়াছে। আবার চিনি ৭৬ লক্ষ হইতে একবারে ১ কোট ৩৮ লক্ষ টাকায় উঠিয়াছে। বিদেশী চিনি এ দেশে আসিয়া ‘স্বদেশী মূৰ্ত্তি ধারণ করিতেছে। চিনির ব্যবসায় বাঙ্গল হইতে প্রায় লুপ্ত হইতেছে। বাঙ্গালী সাবধান ! জাবা হইতে গুড়ও আমদানি হইতে আরম্ভ হইতেছে। র্যাহারা বিদেশী চিনি চিনিবার গোলযোগে গুড় খান তাহারা সাবধান। জাবার চিনি এত সস্তা যে চিনি আনিয়া তাহা গলাইয়া গুড়ে পরিবৰ্ত্তিত করিয়া আমাদের দেশী গুড়ের দামে বিক্রয় করিলেও লাভ থাকে। এখন ত’ চিনির সঙ্গে গুড়ও আসিতেছে, সোণায় সোহাগা ! কিন্তু এখনো সময় আছে-গুড় ও চিনির কারবারে প্রবৃত্ত হও । বেহারে আখের চাষ ইংরেজ চাষীর হস্তগত হইয়াছে। বাংলা রক্ষা কর । নতুবা সব যায়, তাই বলি এখনও সাবধান ! - তামাকের চাষ । চাষের সকল বিভাগেই পাশ্চাত্য জগতে এত নুতন উন্নত প্রণালী অনুস্থত হইতেছে ও বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি প্রবর্তিত হইতেছে যে পুরাতন যেমন তেমন উপায়ে চাষ করিলে সেই চাবোৎপন্ন দ্রব্য প্রতিষোগিতা ক্ষেত্রে কখন আমল পাইতে পারে না। আমাদের দেশ কৃষি-প্রধান দেশ ; আমাদের দেশের প্রধান কর্তব্য সঞ্চয় হইলেও আধুনিক জীবন-যাত্রা কৃষি, শিল্প, বাণিজ্য । २२¢ নিৰ্ব্বাহ-উপযোগী পদার্থ সমস্তই আমাদের দেশে পাওয়া যায় না বলিয়া পরদেশের সহিত আদান প্রদানের সম্বন্ধ প্রমুক্ত রাখিতে আমরা বাধ্য। শিল্পজাত ও সোণা রূপ লোহা প্রভৃতি খনিজ পদার্থ কিছু কিছু আমাদের পরদেশ হইতে লইতেই হইবে, এবং তৎপরিবর্তে অম্মদেশমুলভ কৃষিধন পরদেশকে দিতেই হইবে । কিন্তু যদি পরদেশ জাত কৃষি ধনের সমকক্ষ দ্রব্য আমরা উৎপন্ন করিতে ন পারি তবে আমরা কখনই লাভবান হইতে পারিব না । পুরাতন যেমন তেমন চাষে কৃষিধন ত ভালো হয়ই না, অধিকন্তু উৎপন্ন পরিমাণের অনুপাতে অন্তদেশ অপেক্ষ খরচ বেশি পড়ে, খারাপ জিনিষ বেশি দাম দিয়া লইবার গরজ কাহারে নাই, অতএব ংশোধনের উপায় করিতে ন পারিলে প্রতিযোগিতায় পরাজয় অনিবাৰ্য্য। এই জন্ত চাল, গম, চা, পাট, তামাক, প্রভৃতি সকল কৃষিবিভাগে চাষপদ্ধতির পরিবর্তন ও উন্নতি অত্যাবগুক হইয়াছে। যে পদার্থের চাষ করিতে হইবে তাহা কোন দেশে অধিক গৃহীত হয় তাহ জানিয়া সেই দেশের উপযোগী করিয়া কৃষিধন উৎপন্ন করিতে চেষ্টা করিলেই প্রকৃত লাভবান হওয়া যায়। সকল কৃষিধন অপেক্ষ তামাকের চাষ অন্তান্ত দেশে এমন উন্নত হইয়াছে যে শস্ত্র ভারতে ইহার চাষের উন্নতি না করিলে এই ব্যবসায় একেবারে বন্ধ হইয়া যাইবে। আমেরিকার যুক্তরাজ্যের অনুষ্ঠিত প্রণালী আমাদের দেশেও প্রবৰ্ত্তিত করা নিতান্ত আবখ্যক হইয়াছে। তামাকের পাতা এক প্রকারের হইলে আদৃত হয় ; কিন্তু নানাপ্রকারের পাতা একত্র করিয়া কোন খরিদার লইতে চাহে না । যুক্ত রাজ্যের চারাচাষ বিভাগ হইতে তামাক চাষ সম্বন্ধে এক বিজ্ঞাপন বাহির হইয়াছে, তাহাতে কোন কাজের জন্য কিরূপ তামাক প্রয়োজন এবং তাহা কিরূপ চাষে উৎপন্ন হয় তাহার বৃত্তান্ত বর্ণিত হইয়াছে। প্রকৃতির নিয়ম যে বহিঃসঙ্গমে সস্তানোৎপত্তি হয়। কিন্তু ডারউইন দেখাইয় গিয়াছেন যে তামাক প্রাকৃতিক ব্যাপক নিয়মের বহিৰ্ভত, তামাক আত্মরমণ। তামাকের আত্মপরাগনিষিক্তপুপ হইতে যেমন উত্তম সমগুণময়, সতেজ পাতা প্রচুর জন্মে, পরসঙ্গমোৎপন্ন বৃক্ষ হইতে তেমন হয় না। বিশেষ উদেণ্ড বা বিশেষ দেশের উপযোগী করিয়া তামাক উৎপন্ন করিতে