পাতা:প্রবাসী (সপ্তম ভাগ, প্রথমাংশ).djvu/৩৬২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

.কারিগর লোক আছে—তাহারাই গ্রামের সমস্ত দ্রব্যসামগ্ৰী যোগাইয়া থাকে। মধ্যবৰ্ত্তী কোন লোক নাই। পার্শ্ববৰ্ত্তী গ্রামগুলি স্বকীয় অতিরিক্ত উৎপন্ন দ্রব্য, পরস্পরের সহিত বিনিময় করে। কোন একটা পছন্দসই নূতন জিনিস প্রস্তুত হইলে, প্রথমে সেই গ্রামে ফেরিওয়াল, তাহার পর ব্যাপারী প্রবেশ করে। এই বেণিয়াদের যতই প্রতিপত্তি ধন ঐশৰ্য্য , হউক না কেন, পল্লীসমাজ তাহাদিগকে আমলে আনে না। পল্লীসমাজ উহাদিগকে ঘৃণার চক্ষে দেখে । কিন্তু নগরের মধ্যে ইহার,রাজা বলিলেই হয়। যুরোপীয় প্রতিযোগিতায়, কারিগরশ্রেণী যতটা ক্ষতিগ্রস্ত হইয়াছে, দোকানদারের ততটা হয় নাই । বিলাসদ্রব্য ছাড়া, উহার সমস্ত বিলাতী জিনিসই বিক্রয় করিয়া থাকে ;-কাপড়-চোপড়, পেরেক, লোহা, মোমবাতি, কেরোসিন, এমন কি ফোটোগ্রাফের উপকরণ পর্য্যন্ত । ইহার বিদেশী বণিকদিগকেও বাজার হইতে বেদখল করিয়াছে। কিন্তু ইহারা খুব অল্প লাভেই সন্তুষ্ট। বিলাতী বণিকদের অনেক খরচ, সুতরাং উহার অত্যন্ত মহার্ঘ্য মূল্যে জিনিস বিক্রয় করে। যদি হিন্দু দোকানদারদের ব্যবহার খাটি হইত—অর্থাৎ উহার বাণিজ্য বিষয়ে খাটি ব্যবহারের মূল্য বুঝিত—তাহা হইলে যুরোপীয় প্রতিযোগীরা এখানে দোকানপাট বন্ধ করিয়া কোন কালে স্বদেশে ফিরিয়া যাইত । ইহা সত্ত্বেও, বর্তমান ইংরাজের আমলে, যেমন কুশীদজীবীর তেমনি ব্যাপার বেণিয়ারও বেশী কিছু আক্ষেপ করিবার বিষয় আছে বলিয়া বোধ হয় না। বেণিয়া ধনশালী হইয়া উঠিলে, বাহিরে তাহার An ঐশ্বৰ্য্যের পরিচয় পাওয়া যায় না ; উহাদের বৈভব আড়ম্বরের সহিত লোকের সম্মুখে প্রদর্শিত হয় না। এখন কোন বিবাদের আশঙ্ক না থাকিলেও, সম্পূর্ণরূপে আত্মপ্রকাশ কুরিতে বেশিয়ার সাহস পায় না। সেকালে, বিলাস-বিভবের কোন প্রকার নিদর্শন দেখাইলেই আপনার বিপদ আপনি ডাকিয়া আনা হইত-আপনাকে অপরাধী . বলিয়া যেন ঘোষ্ণু করা হইত। ক্যান্টন নগরস্থ ধনাঢ্য বণিক, দোকানে পণ্যদ্রব্য যে ভাবে সাজাইয়া রাখে তাহা অতি জঘন্ত ; সে ম্যাওরিনের কৌতুহলী দৃষ্টিকে সৰ্ব্বদাই ভয় করে ;.তাহার দোকানে প্রবেশ কর—তাহার জিনিসের নাগরিক ভারত । आम भाजरे आभनन्ड बभनि भरीख डेशत्र निबद्र ७०१ কিছুই অসিদ্ধি পাইবে না। ভারতেও এইরূপ–এবং ইহার মূলে একই হেতু বিদ্যমান। কেন না, বিবাদের আশঙ্কা চলিয়া গেলেও, অবিশ্বাসের ভাব এখনও রহিয়াছে । বিলাস বিভবের সামগ্ৰী সমস্তই প্রচ্ছন্ন, আচ্ছাদিত, লুঙ্কায়িত। দোকানদার তোমার চক্ষের সন্মুখে ছোটখাট অল্পমূল্যের জিনিস ভিন্ন কোন মূল্যবান জিনিস বাহির করিতে সাহস করিবে না—যদি বাহির করে তাও আবার অৰ্দ্ধ অন্ধকারের মধ্যে। এই জন্যই বোম্বাই নগরে-এমন কি ভারতের নগর মাত্রেই—হয় ত দোকানের জিনিসগুলা খুব কৌতুহলজনক, বিচিত্র বর্ণবিন্যাসের দ্বারা চিত্ৰবৎ সুশোভন, ঝকঝকে চক্‌চকে, কিন্তু দোকানটি দেখিলে মনে হইবে অতীব দীন ভাবাপন্ন। আসলে তাহী নহে । কিন্তু স্বৰ্য্য—প্রাচ্যদেশের স্বৰ্য্য—একটি অপূৰ্ব্ব যাদুকর— কত চিত্তবিমোহন পরীকৃষ্ঠের সৃষ্টি করিয়া চক্ষু ঝলসাইয়া দেয় ; দোকানের খেলো জিনিসের উপর—খেলে কাপড়ের উপর, স্বৰ্য্য-রশ্মির একটা স্বর্ণময় অবগুণ্ঠন নিক্ষেপ করে। ভারতের আর সমস্ত নগরের মত বোম্বায়ের দেশী সহরটিও অপরিস্কৃত, কিন্তু কলিকাতার মত অতটা অপরিস্কৃত নহে । কলিকাতা নর্দামা ; বারাণসী আবার তারও বাড়া-গোবরের ঢিবি। কিন্তু চীনে সহরের তুলনায় কলিকাতাও স্বর্গ। চীনের রাস্তাগুলাকে ময়লার নালা বলিলেও চলে । কোন ইংলণ্ডীয় সহর যেরূপ পরিস্কৃত, বোম্বাই সেইরূপ পরিস্কৃত । বোম্বায়ের নালা নর্দামা যদি কুগঠিত হয়, যদি রাস্তাঘাট ভাল করিয়৷ ধৌত না হয়, মলরাশিতে ও পচা মাংসে সৰ্ব্বদাই সমাচ্ছন্ন থাকে--(অবত মন্যান্য প্রাচ্য নগরের মত নহে ) তবে সে দোষ, দেশী মুনিসিপ্যালিটরতা ছাড়া নিশ্চয় জানিবে, সে দোষ স্বৰ্য্যের—পৰ্য্যন্য দেবের— শকুনি গৃধিনী আদি শিকারী পক্ষীর-কেন না,সহর পরিষ্কৃত রাখিবার ভার ইহাদেরই উপর ! প্রাচ্য ভূখণ্ডে,—এমন কি, বোধ করি সমস্ত ভূমণ্ডলে— পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা জাপানীদের দ্বারা প্রবর্তিত হইয়াছে – ইহা জাপানীদের উদ্ভাবিত জিনিস। উহাদের বাড়ীগুলি দেখ,—ধূলার নাম গন্ধ নাই ; উহাদের নগরাদি এরূপ পরিস্কৃত, এরূপ শোভনমুনার, এরূপ সযত্নে পরিধৌত; এরূপ নিখুঁতভাবে পরিমার্জিত, দেখিলে মনে হয় যেন সম্ভ স্নান