পাতা:প্রবাসী (সপ্তম ভাগ, প্রথমাংশ).djvu/৪৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8ર শববাহকগণ ইতস্ততঃ বিচরণ করে। পার্শিদের শাস্ত্রে সৎকাৰ্য্য, সৎবাক্য ও সচ্চিস্ত নামক তিনটা নৈতিক উপদেশ আছে ; মঞ্চের ভাগতিনটা উহাদের সংখ্যা জ্ঞাপক । প্রথমভাগে পুরুষের, দ্বিতীয়ভাগে স্ত্রীলোকের এবং অপর ভাগে শিশুদের শব রক্ষিত হয়। মঞ্চে শব স্থাপন করিবার সময় আবরণ ও অন্তান্ত বস্ত্রাদি ভক্ষ্মীভূত করা হয়। শাস্ত্রের আদেশ “নগ্ন অফস্থায় আমরা আসিয়াছি, নগ্ন অবস্থায়ই আমাদের যাওয়া উচিত।” এই সময় আত্মীয় স্বজনগণ মৃত ব্যক্তির প্রতি শ্রদ্ধা ও সন্মান প্রদর্শন পুৰ্ব্বক শেষ বিদায় গ্রহণ করে । শব মঞ্চে স্থাপন করিব মাত্র বহুসংখ্যক শকুনি আসিয়া ২১ ঘণ্টার মধ্যে মাংসাদি নিঃশেষ করিয়া ফেলে। কিছু দিন পরে অস্থি পঞ্জর স্বৰ্য্যোত্তাপে ও বায়ু সংস্পর্শে শুষ্ক হইলে শববাহকগণ উছ পূৰ্ব্বোক্ত কুপে নিক্ষেপ করে। তথায় কালক্রমে অস্থিগুলি চুণ ওফফোরাসময় চূর্ণে পরিণত হয়। কালের প্রভাবে শত্রু মিত্র ধনী মানী দরিদ্র ব্যক্তি একই অবস্থা প্রাপ্ত হইয়া পরস্পর মিশিয়া যায়। যে শিখরে মঞ্চ নিৰ্ম্মিত হয়, উহার তলদেশে ভূগর্ভে চারিটা *Rš:#*i (underground wel1) <!ft* I sẽ কুপগুলি পূৰ্ব্বোক্ত মঞ্চমধ্যস্থিত কুপের অনেক নীচে অবস্থিত। মঞ্চমধ্যস্থিত কুপের তলদেশ পর্য্যস্ত প্রস্তর দ্বার বাধান। এই হেতু এই কূপে সঞ্চিত বৃষ্টির জল পৃথিবীতে শুষিয়া না গিয়া চারিট প্রস্তরনিৰ্ম্মিত অন্তঃপ্রণালী দিয় (underground drain) joiro ass:#" bifatire আসে এবং তথা হইতে পৃথিবীতে শুষিয়া যায়। বৃষ্টিজল গলিতশবনিঃস্বত রসরক্ত ধৌত করিয়া মঞ্চের উপরিস্থিত ক্ষুদ্র নালা বাহিয়া কূপে পতিত হয়, এবং কুপে স্তুপীকৃত অস্থিচূর্ণের সহিত মিশিয়া অত্যন্ত কলুষিত হয়। এই কলুষিত জল দ্বারা পৃথিবী অপবিত্র হইবে, এই ভয়ে জল শোধন না করিয়া মৃত্তিকার সহিত মিশিতে দেওয়া হয় না। কুপসঞ্চিত জল শোধন করিবার জন্ত জলপ্রণালীগুলিতে বৎসর বৎসর নুতন অঙ্গার ও বালি প্রস্তর রাখা হয়। এবং অন্তঃকুপগুলিতে কয়েক স্তর বালি ফেলিয়া দেওয়া হয় । কবরস্থিত শব দ্বারা ভূমি ও বায়ু উভয়ই অস্বাস্থ্যকর হয়। অসংখ্য কীটে ভক্ষণ করিলেও বহুসময় পৰ্য্যন্তু উকা পচিতে প্রবাসী । [ ৭ম ভাগ। থাকে। এবং তজ্জন্ত দুর্গন্ধে অন্যান্তের স্বাস্থ্য নাশ হয়। কিন্তু পার্শিদের সমাধি মঞ্চে নরদেহ দুইঘণ্টার মধ্যে অস্থিতে পরিণত হয়। অস্থিগুলি পচিয়াও সামান্ত দুৰ্গন্ধ হয় বটে, কিন্তু সমাধি-মঞ্চ অতি উচ্চস্থানে নিৰ্ম্মিত হওয়ায় কোন প্রকার অনিষ্ট হইতে পারে না । ধনী দরিদ্র নিৰ্ব্বিশেষে সকলে একই রীতিতে সমাধিমঞ্চে নীত হয়। নিযুক্ত শববাহকগণ লৌহনিৰ্ম্মিত খটায় মৃতদেহ গৃহ হইতে সমাধি-মঞ্চে আনয়ন করে। মৃতব্যক্তির আবাস যতই দুরে হউক না কেন, শোকাৰ্ত্ত আত্মীয়স্বজনগণ পদব্রজে শবের অনুসরণ করে। কিন্তু তাহারা মৃতদেহ স্পর্শ করিতে পারে না । দীর্ঘ শুভ্রবেশ পরিধান করিয়া পরস্পর দুইজন হস্ত ধারণ পূৰ্ব্বক শ্রেণীবদ্ধ হইয় তাহার অগ্রসর হয়। শোক ও সহানুভূতি প্রকাশীর্থ সকলেই বদ্ধহস্তে একথান রূমাল ধারণ করে। শববাহকগণ “থাণ্ডিয়া” ও “নাশাদুলার” নামক দুই শ্রেণীতে বিভক্ত । নাশাকুলার নামক শববাহকগণ ধৰ্ম্মাচাৰ্য্য। তাহার কোন বিশেষ ধৰ্ম্মানুষ্ঠান করিতে, মৃতদেহ মঞ্চের ভিতরে বহন করিতে, এবং মঞ্চের ভিতর গমনাগমন করিতে একমাত্র অধিকারী । মৃত ব্যক্তির আত্মীয়স্বজনগণ কেবল মাত্র মঞ্চদ্বার পর্য্যন্ত শবের অনুসরণ করে । খাণ্ডিয়াগণও মঞ্চদ্বার পর্য্যন্ত শব বহন করিয়া ক্ষাস্ত হয় । মৃত ব্যক্তির গৃহে উপাসনা হয়। উদ্যানে কিম্বা মঞ্চে কোন প্রকার ধৰ্ম্মামুষ্ঠান হয় না । বোম্বাই সহরের প্রত্যেক অংশে বহুসংখ্যক শববাহক নিযুক্ত আছে। সমাধি-মঞ্চে মৃত ব্যক্তির নামধামাদি "রেজেষ্টারী" করা হয়। মৃত্যু সংখ্যা মাসে গড়ে প্রায় এক শত। - পার্শিদের শাস্ত্রানুসারে আত্মা অবিনশ্বর ও স্বাধীন এবং স্বকীয় কৰ্ম্মের জন্ত জগৎস্রষ্টার নিকট দায়ী। সদসৎ কৰ্ম্মানুসারে নরনারীগণ পরকালে পুরস্কার ও নিগ্ৰহ ভোগ করে । পুণ্যাত্মা বিমল আনন্দ সম্ভোগ করেন । এবং অসদাত্মা ক্লেশ ও শাস্তি সহ্য করে। প্রতি বৎসর বিভিন্ন জাতীয় বহু দর্শক বম্বের সমাধি-মঞ্চ দর্শন করিতে আসে। মালাবার পাহাড়ের সৰ্ব্বোচ্চ স্থানে চতুর্দিকে দেওয়ালবেষ্টিত স্ববিস্তৃত উষ্ঠানের ভিতর মঞ্চ নিৰ্ম্মিত হইয়াছে। এখানে সৰ্ব্বশুদ্ধ পাচট মঞ্চ আছে।