পাতা:প্রবাসী (সপ্তম ভাগ, প্রথমাংশ).djvu/৯৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

২য় সংখ্যা । ] এই দুই বিপরীত ফুলে ডারুইন অবাকৃ হইয়া পড়িয়াছিলেন, এবং বহুচিস্তায় ইহার অন্ত কোনও ব্যাখ্যান না পাইয়া, এ গুলিও উদ্ভিদের বিশেষ ধৰ্ম্ম বলিয়া শেষে নিস্কৃতি লাভ করিয়াছিলেন । তিনি আরো বলিয়াছিলেন, এই সকল বিশেষ বিশেষ গুণ, উদ্ভিদ মাত্রেরই জাতি ও বংশরক্ষার অনুকুল বলিয়া, অভিব্যক্তিবাদের নিয়ম অনুসারে সেগুলি ক্রমশঃ উদ্ভিদের নিজস্ব হইয়া দাড়াইয়াছে। যাহা হউক, গাছের উদ্ধাধঃ অংশের বৃদ্ধিবৈচিত্র ও তাহাদের আঘাত অনুভূতির পার্থক্য সম্বন্ধে আচাৰ্য্য বস্থ মহাশয় কি বলেন, এথন আলোচনা করা যাউক । উদ্ভিদের কোন অঙ্গে আঘাত উত্তেজন প্রয়োগ করিলে, আহত স্থান হইতেই উত্তেজনা প্রবাহিত হইয়া স্বতঃই দুষ্ট প্রকারের সাড়ার উৎপত্তি করে।+ ( ১ম ) আহত স্থান হষ্টতে আরম্ভ করিয়া ব্লসপ্রবাহের সাড়া । ( ২য় ) আণবিক বিকৃতিজাত সাড়া। এই দুইটি সাড়ার মধ্যে প্রথমটিরই বেগ দ্রুততর, এবং ইহাই গাছকে বাড়ায় । দ্বিতীয় অর্থাৎ আণবিক বিকৃতিজাত প্রকৃত সাড়া কিছু মন্থর গতিতে চলে, এবং তদ্বারা গাছের বৃদ্ধি রোধপ্রাপ্ত হয়। এই দুই বিচিত্র প্রবাহের কথা অনুমানমূলক নহে, জীবিত উদ্ভিদের অঙ্গে আঘাত দিলেই যে ঐ দুই সাড়া বিভিন্নগতিতে সৰ্ব্বাঙ্গে ছড়াইয়া পড়ে, আচাৰ্য্য বসু মহাশয় শত শত পরীক্ষায় তাহ প্রত্যক্ষ দেখাইয়াছেন। উহাদের অস্তিত্ব জানিতে হইলে, বৈদ্যুতিক উপায় অবলম্বন করাই সহজ । ৩য় চিত্রের “a” অংশের “A” চিহিত স্থানটি কোনও শাখার একটি বৰ্দ্ধনশীল অংশ। ঐ স্থানে একখণ্ড তারের একপ্রাস্ত সংলগ্ন করিয়া, (a) (b) (c) ৩য় চিত্র । তাহার অপরপ্রান্তটিকে এক নিকটবৰ্ত্তী পত্রে সংযুক্ত রাখা উদ্ভিদের বৃদ্ধিবৈচিত্র। • আমাগত চৈত্র মুসের “প্রবাসী"তে ইহার বিশেষ আলোচনা করিয়াছি । ويبيا همه " হইয়াছে, এবং সেই তারের ভিতর একটি তড়িৎ মাপক भुल्नु (Galvanometer ) Hffè sitte a crtas strits উত্তেজনায় বৃক্ষ অঙ্গে যে তড়িৎপ্রবাহ উৎপন্ন হয়, তাহার দিক ও পরিমাণ ঐ যন্ত্র দ্বারা পরিমাপ করা যায়। আচাৰ্য্য বসু মহাশয় দেখিয়াছেন, কোনও আঘাতে প্রকৃত অর্থাৎ আণবিক উত্তেজনার সাড়া চলিতে আরম্ভ করিলে, তড়িৎ মাপক যন্ত্রের শলাকা যে দিকে বিচলিত হয়, রসপ্রবাহের সাড়া চলিলে সেটি বিপরীত দিকে ফিরিয়া পড়ে । “a” চিত্রটির “T” চিহ্ণিত স্থানে আঘাত দাও, দেখিবে “G” চিহিত যন্ত্রের শলাকা বিচলিত হইয়া পড়িতেছে। ইহা ঐ আঘাতের রসগুবাহজনিত সাড়ার কাজ,—কারণ আমরা বলিয়াছি রসপ্রবাহের সাড়ার গতিই দ্রুততর। এই সাড়া থামিয়া গেলে, শলাকাটিকে বিপরীতদিকে চলিতে দেখা যাইবে, ইহাই সেই নাতিদ্রুত প্রকৃত সাড়ার কাজ। আচাৰ্য্য বস্থ মহাশয় কোন বৃক্ষশাখায় ৩য় চিত্রের অনুরূপ তার সংযুক্ত করিয়া তড়িৎমাপক যন্ত্রের শলাকার বিচলন পরীক্ষা দ্বারা উদ্ভিদতত্ত্বের অনেক জটিল সমস্তার সমাধান করিয়াছেন । তিনি প্রথমেই চিত্রের “a” চিহূিত অংশস্থ “T” স্থানটি তাপ প্রয়োগ করিয়া বা চিম্টি কাটিয়া উত্তেজিত করিয়াছিলেন। তড়িৎমাপক যন্ত্রে কেবল রসপ্রবাহের সাড়া পাওয়া গিয়াছিল। তার পর তিনি সেই স্থানেই আবার বহুক্ষণ ধরিয়া প্রবল উত্তেজনা প্রয়োগ আরম্ভ করিয়াছিলেন । ইহার ফলে, প্রথমে রসপ্রবাহের সাড়া, এবং পরে প্রকৃত আণবিক উত্তেজনার সাড়া যন্ত্রে প্রকাশ হইয়া পড়িয়াছিল । এতদ্ব্যতীত আচাৰ্য্য বসু মহাশয় *b” চিত্রের “A” চিহ্ণিত স্থানেও উত্তেজনা প্রয়োগ করিয়াছিলেন । ইহাতে কেবল আণবিক সাড়ার প্রবাহের লক্ষণ যন্ত্রে প্রকাশ হইয়া পড়িয়াছিল, রস প্রবাহের উত্তেজনার লক্ষণ এ স্থলে মোটেই দেখা যায় নাই । পূৰ্ব্ববর্ণিত পরীক্ষাগুলির ফলে বেশ বুঝা যায়, বৰ্দ্ধনশীল অংশ হইতে কিছু দূরে, অর্থাৎ “T” এর মত স্থানে একদিক ঘেঁসিয়া (Unilateral ) উত্তেজনা দিলে, শাখার সেই দিক দিয়া কেবল রসপ্রবাহের দ্রুত সাড়া চলিতে আরম্ভ করে। আণবিক বিকৃতিজাত প্রকৃত সাড়া ঐ মৃদু উত্তেজনায় সেখানে মোটেই পৌছায় না, এবং এই প্রকার এক দিকে সোধ