পাতা:প্রভাত সংগীত-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.djvu/২৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
প্রভাত সংগীত
১৯

মিশাতে অনন্ত প্রাণে অনন্ত প্রাণের ধারা।
ডাকে যেন—ডাকে যেন—সিন্ধু মোরে ডাকে যেন,
আজি চারিদিকে মোর কেন কারাগার হেন।
পৃথিবীরে বুকে লয়ে সমুদ্র একেলা বসি’
অসীম প্রাণের কথা কহিতেছে দিবানিশি,
আপনি জানে না যেন,
আপনি বুঝে না যেন,
মহাসিন্ধু ধ্যানে বসি’, আপনি উঠিছে বাণী;
কেহ শুনিবার নাই—নাই কোথা জনপ্রাণী।
কেবল আকাশ একা দাঁড়ায়ে রয়েছে তথা,
নীরব শিষ্যের মতো শুনিছে মহান্‌ কথা।
কী কথা রে—কী কথা সে—শুনিতে ব্যাকুল প্রাণ,
একেলা কবির মতো গাহিছে কিসের গান।
শীত নাই, গ্রীষ্ম নাই, দিন নাই, রাত্রি নাই,
সঙ্গী নাই, জনপ্রাণী নাই,
একাকী চরণ প্রান্তে বসিয়া শুনিব তাই।
আসিবে গভীর রাত্রি আঁধারে জগত ঢাকি
দিশাহারা অন্ধকারে মুদিয়া রহিব আঁখি।
স্তব্ধতার প্রাণ উঘাটিয়া
ভেদি সেই অন্ধকার ঘোর
কেবলি সে একতান
সমুদ্রের বেদগান
সারারাত্রি অবিশ্রাম পশিবে শ্রবণে মোর।
ওই যে হৃদয় মোর আহ্বান শুনিতে পায়,