পাতা:প্রাকৃতিকী.pdf/৩৩৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
শুক্র-ভ্রমণ
২৯১

কলাবিদ্যার বিপুল কীর্ত্তিস্তম্ভ এই অট্টালিকা যে আমাদের পরিচিত শুক্রবাসিগণের হস্তপ্রসূত নয়, তাহা আমরা বিলক্ষণ জানিতাম; বন্ধু অনুমান করিলেন, শুক্রের এই অংশে নিশ্চয়ই এককালে অতি উন্নত জীবের বসতি ছিল, সেই সময় বোধ হয় পৃথিবীর ন্যায় এখানেও নিয়মিতরূপে দিবারাত্রি হইত; পরে কোন দুর্ঘটনা বশতঃ ইহা চিরান্ধকারাবৃত হইয়া উন্নতজীবাবাসের সম্পূর্ণ অনুপযোগী হইয়া গিয়াছে এবং কালে সেই সকল উন্নত জীবগণের বংশ লোপ হইয়াছে, এই ভগ্ন অট্টালিকা কেবল প্রাণিহীন তামসাচ্ছন্ন প্রান্তরে দাঁড়াইয়া তাহাদের লুপ্ত গৌরবের সাক্ষ্য প্রদান করিতেছে। বন্ধুর অনুমান সম্পূর্ণ যুক্তিসঙ্গত বলিয়া বোধ হইল।

 এই ঘটনার পর কিছুদূর অগ্রসর হইয়া, এক সময়ে আমাদের পুরোবর্ত্তী পূর্ব্বাকাশে ঈষৎ আলোকচিহ্ন দেখা গেল—নির্ম্মল শুক্রাকাশে এই দৃশ্য বড়ই প্রীতিকর বলিয়া বোধ হইল। এই ভয়ানক অন্ধকারময় রাজ্যে আসিয়া পর্য্যন্ত এমন স্নিগ্ধমধুর আলোক চক্ষুর্গোচর হয় নাই, ঊষাগমনের পূর্ব্বে পার্থিব গগনে যে ক্ষীণালোকের বিকাশ দেখিয়াছি, ইহা ঠিক তদনুরূপ। ইহা যে সূর্য্যোদয়ের চিহ্ন নয়, তাহা আমরা বিলক্ষণ জানিতাম; শুক্রে অদিম অবস্থা যাহাই থাকুক, এখন ইহার একাংশ যে এককালে সূর্য্যালোকরহিত ও অপরাংশ সর্ব্বদাই সৌর-কিরণোন্মুক্ত, তাহাতে আর আমাদের সন্দেহ ছিল না। গণনা করিয়া দেখিলাম, আমরা তথনও শুক্রের আলোকিতাংশ হইতে প্রায় সার্দ্ধ চারিশত ক্রোশ ব্যবধানে অবস্থিত; এতদূর হইতে সূর্য্যালোক-চিহ্ন প্রত্যক্ষ করা সম্পূর্ণ অসম্ভব। বন্ধু বলিলেন, আমরা পৃথিবীতে সূর্য্য-উদয়ের অনেক পূর্ব্বে যেমন রশ্মি সকলের পথপরিবর্ত্তন দ্বারা বহুদূরস্থিত সূর্য্যের আলোক দেখিতে পাই, এখানেও হয়ত সেই প্রকারে শুক্রবায়ুরাশিতে দূরস্থিত সূর্য্যরশ্মি প্রবেশ করায়, তাহার