পাতা:প্রাচীন বাঙ্গলা সাহিত্যে মুসলমানের অবদান.djvu/১০৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

প্রাচীন বাঙ্গল সাহিত্যে মুসলমানের অবদান Ꮌ☾ আমাদের স্থান অল্প, সুতরাং ফকির ও বাউলদের সমৃদ্ধ গীতি-সাহিত্য, জারি ও মুর্শদাগান প্রভৃতি সম্বন্ধে এখানে কিছু বলিতে পারিব না। ইহ। ছাড়া, মুসলমানী মুদ্রাযন্ত্র হইতে কেচ্ছা-নামধেয় অসংখ্য দেশীয় গল্প দিনের পর দিন প্রকাশিত হইতেছে ! এই সকল কেচ্ছার বিষয়-বস্তু অনেক স্থানেই মুসলমানী এবং ইহাদের ভাষাও নুনাধিক পরিমাণে ফারসী ও উর্দুশদবহুল ; তাহদের মধ্যে কতকগুলিতে বিদেশীয় শব্দ এত অধিক যে, বাঙ্গালী হিন্দুদের তে কথাই নাই, এদেশের মুসলমানগণেরও অনেকের নিকট সেগুলি দুৰ্ব্বোধ । যে অপ্রকাশিত গীতি-কবিতা ও রূপকথার বিরাট ভাণ্ডার সম্বন্ধে আমি এতক্ষণ ধরিয়া লিখিলাম, তাহদের ভাষা প্রাদেশিক বাঙ্গল, তাহ। পূৰ্ব্ববঙ্গের খাটিভাষা,—তাহ হিন্দু ও মুসলমান র্যাহারাই রচনা করিয়াছেন, তাহাতে বাড়াবাড়ি মাত্র নাই ; উহ। পল্লীবাসীদের সহজ সুন্দর মনোভাব জ্ঞাপক সরলভাষা যে ভাষায় পল্লীবাসীরা কথা কহিয়া থাকে, ইহা সেই ভাষা । নিরক্ষর ও একান্তরূপে পাণ্ডিত্য-বজ্জিত জনসাধারণ তাহা কোনরূপ কাব্যালঙ্কার দিয়া সাজাইবার চেষ্ট করে নাই, তাহার এলেমদার নহে, ফারসী বা সংস্কৃতের অলঙ্কারশাস্ত্র তাহাদের জানা নাই । তাহারা আকাশে পার্থীদের সুমিষ্ট গান শুনিয়াছে, তাহারা নীল-কৃষ্ণনীরা সরসীর বক্ষে পদ্ম ও কুমুদ ফুটিতে দেখিয়াছে, আম্রকুঞ্জ-পরিশীলন চঞ্চল বায়ু তাহাদিগকে সুরভি দান করিয়া শরীর জুড়াইয়া দিয়াছে,—এই দৃগুপটের পরিবেষ্টনীর মধ্যে আশে-পাশের মানুষগুলি তাহার। যেমন দেখিয়াছে, তেমনই আঁকিয়াছে । তাহার হৃদয়কুঞ্জ চির কুসুম-গন্ধী, সেই সরল পবিত্র উৎস হইতে তাহারা যে প্রেমের প্রেরণা পাইয়াছে, তাহাঁদের সাহিত্য সেই প্রেরণায় ভরপুর। তাহদের আঁকা রূপসীর কলসী-কাখে জল আনিতে যায়, কিন্তু নিতম্বের গুরুত্ব দেখিয় মেদিনী মাটী হইয়া যায় না, তাহাদের নাভি-কূপে কামদেব