পাতা:প্রাচীন বাঙ্গলা সাহিত্যে মুসলমানের অবদান.djvu/১১৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

X o 8 প্রাচীন বাঙ্গলা সাহিত্যে মুসলমানের অবদান “বিশু-নাপিত অতি দরিদ্র ছিল, তাহার পাঁচটি পুত্র ছিল। সে স্ত্রী ও সস্তানগণ লইয়া কুটীরে বাস করিত এবং ভিক্ষা করিয়া খাইত। কিন্তু ক্রমে ক্রমে তাহার চারিটি পুত্রই অকালে মৃত্যুমুখে পড়িল। নিদারুণ শোকগ্রস্ত বিশু নদীর ভাঙ্গন-পাড়ে বসিয়া বিলাপ করিতেছিল, হঠাৎ পাড় ভাঙ্গিয় নদীর জলে পড়িয় সে অদৃষ্ঠ হইয়া গেল। একমাত্র অবশিষ্ট শিশু-পুত্র বাসু ও তাহার বিধবা-মাতা গৃহে রহিল। বামুর মাতাও গলায় ফার্সি লাগাইয়৷ মরিবার জন্ত বনেরদিকে ছুটিল, কিন্তু বাক্ষর মুখ দেখিয় সে মৃত্যুর সঙ্কল্প ত্যাগ করিল। “পাড়ায় তাহাদের আত্মীয়-স্বজন কেহই ছিল না । কিন্তু কোচ জাতীয় কানুর মাতা এই দুৰ্দ্দশাপন্ন মাতা-পুত্রের সহায় হইল। ক্রমে বাস্থ বড় হইল এবং তদপেক্ষ তিন বৎসরের বড় কোচ কানুর সঙ্গে বন্ধুত্বপাশে আবদ্ধ ইহল। কোচ কানু—বামুকে ডাকাতি করিতে শিখাইল । এক বৃদ্ধ ব্রাহ্মণ ও তাহার স্ত্রীকে জলে ডুবাইয়। মারিয়া কামু ও বাস্থ বিস্তর ধন-দোঁলত পাইল। এই সংবাদ শুনিয়া বাক্ষর মা একেবারে অবসন্ন হইয়া পড়িল এবং মনস্তাপে জরগ্রস্ত হইয়া কয়েকদিনের মধ্যে মারা গেল । ইহার পর সামান্ত কিছুকাল অনুতপ্তভাবে দিন কাটাইয়া বাস্থ আবার কামুর সঙ্গে ডাকাতি করিতে লাগিল। এই সময় শিমুলতলা গ্রামবাসী সাধু শীলের কন্যা মাণিকতারার সঙ্গে বামুর বিবাহ হইয়া গেল। কানু ও বাস্থর প্রধান শত্র ছিল কালু ডাকাত ; সে একদা একটি খুব লাভের স্থলে ডাকাতি করিতে সঙ্কল্প করিয়াছিল। ইতিমধ্যে কামু ও বালু পূৰ্ব্বেই টের পাইয়া সেই স্থানে ডাকাতি করিয়া সমস্ত অর্থ-সম্পদ দখল করিল। কালু-সর্দারের মুখের গ্রাস এইভাবে লুষ্ঠিত হওয়ায় সে নিতান্ত ক্রুদ্ধ হইয়া কামুর দলকে অনুসরণ করিল এবং যদিও বামু নাপিত টাকাকড়ি লইয়। পুর্কেই পলাইয়া গিয়াছিল, কালু সর্দার— কামু-কোচকে ধরিয়া