প্রাচীন বাঙ্গল সাহিত্যে মুসলমানের অবদান > > ○ সে বাঙ্গ সাজিয়া যেভাবে দারু খাইয়। নিভৃতে প্রেমের খেলা খেলিবার লোভ প্রদর্শণ পূর্বক কালু-সদারের ছেলে দলু মিয়াকে বন্দী করিয়াছিল, তাহা দুর্গেশনন্দিগীর বিমলার চাতুৰ্য্যের কথা স্মরণ করাইয় দেয়। কিন্তু মাণিকতারার ছদ্মবেশে নৌকায় অভিনয়ের ভিতর এরূপ বাস্তবতাপূর্ণ গ্ৰাম্য-চিত্রণ আছে, সাঙ্গ বঙ্কিম বাবু দেখাইতে পারেন নাই । কবি জামায়েতুল্লার রহস্য-প্রিয়তার পরিচয় অনেক ছত্রেই আছে। আমরা তাহার আখ্যান-বৰ্ণনার মধ্যে একটা উজ্জ্বল সকৌতুক দৃষ্টির সন্ধান পাই, যাহাতে সমস্ত আখ্যায়িকটি রহস্তে জল হইয়। উঠিয়াছে । ত্বরান্বিত তুলিকার দ্রুতগতির মধ্যে মধ্যে দুই-একটি ছত্রে এক-একটি জীবন্ত-চিত্র কুটিয়া উঠিয়াছে । শৈশব অতিক্রম করিয়| বাস্থ যৌবনে প। দিয়াছে— "বিশ বচ্ছুর স্বয়ান’ বাস্ট পাড়ায় পাড়ায় ঝোপ-জঙ্গলে লাফায় জানি ঘোড়া" । আবার— “সাক্রেদু হৈল বাস্থ নাই, ওস্তাদ কানু-কোচ। মানুষ, গরু কেউ মানে না, ফুলাইয়া ফিরে মোচ।” অনেক স্থানে কবির ভাষার সময়-অসময় জ্ঞান থাকে ন! । যেখানে বৃদ্ধ বামুন ও বামুণীকে কান্ত ও বাস্থ নিষ্ঠুরভাবে হত্য করিতেছে, সেখানেও কবির এই অসাময়িক ব্যঙ্গ-প্রিয়তার পরিচয় পাওয়া যাইতেছে । কানু বুড়। বামুনের মৃত্যুকালীন অবস্থা-প্রসঙ্গে বলিতেছে,—“দাইড়। ঠাকুর দাড়ি নাড়চে ছাগল যেমন নাড়ে।” রসুইঘরে রান্নার বিলম্বে ছেলের বে-fঋদের উপর খাপ্প হইয় গালি দিতেছে, ক্ষুধার জালায় এক পুত্র তাহার স্ত্রীকে প্রহার পর্য্যন্ত করিতে উদ্যত হইল— “সোয়ামী আইল রাগ করিয়া ধল্ল চুলের মুঠি।” অন্তক্রে— “ভাস্থর করে কিচির মিচির, দেওরে কৃরে রাগ। ফোট-তিলক কাইট হউর সাইজ রইছে বাঘ ॥”
পাতা:প্রাচীন বাঙ্গলা সাহিত্যে মুসলমানের অবদান.djvu/১২২
অবয়ব