পাতা:প্রাচীন বাঙ্গলা সাহিত্যে মুসলমানের অবদান.djvu/১২৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Ꮌ Ꮌbr প্রাচীন বাঙ্গলা সাহিত্যে মুসলমানের অবদান তরুণ-বয়স্ক প্রণয়ী-যুগলের চিত্র অতি স্বাভাবিক হইয়াছে। মাঞ্চুর মায়ের মনের দুঃখ তিনি নিজের অন্তর দিয়া বুঝিয়াছেন । এস্থলে এই সীতাসাবিত্রীর দেশে কোন হিন্দু-কবি পতিত রমণীর চিত্র এরূপ উজ্জ্বল ও হৃদয়গ্রাহী করিয়া গড়িতে পারিতেন না; সাধারণ সংস্কারে সে নষ্ট ও কুলত্যাগিণী। হিন্দু-কবি সেকালে এইরূপ প্রসঙ্গে নিন্দ ও অভিসম্পাতের ভাষায় মাঞ্চুর মা’র চরিত্রের অপরদিকটার প্রতি তীব্র মন্তব্য করিতেন। কিন্তু স্বভাব-কবি ইতাদের কোন কামকলা বা শ্লীলত-হীনতার চিত্র চিত্রিত করেন নাই, আশা-ভঙ্গে ও মনোভঙ্গে কাতর প্রণয়ী-যুগলের মিলনেচ্ছা ও পরস্পরের জন্ত উৎকণ্ঠাপূর্ণ ভালোবাসা আঁকিয় দেখাইয়াছেন। সহস্ৰ ংস্কারের বশবৰ্ত্তী হওয়া সত্ত্বেও মানবের হৃদয়-শতদলে যখন প্রেম অঙ্কুরিত হয়, তাহ কবি ও দরদীর চক্ষে সুন্দর লাগিবেই। এই নর-নারার প্রেম বখন বৌবনকালে অতৃপ্ত বাসনা লইয়। তাঙ্গাদের দুয়ারে অতিথি-বেশে দেখা দেয়, তখন স্বভাবের বশে সেই দৃপ্ত মনোরম হয় । কবি সেই চক্ষে এই প্রেম-ব্যাপারটি লক্ষ্য করিয়াছেন । মণিরের প্রতি শ্রদ্ধা সত্ত্বেও পিশাচ’, ‘রাহু', 'গোময়’ প্রভৃতি উপমায় তিনি তাহার বিবাহের প্রতি মন্তব্য করিয়াছেন। সুতরাং সামাজিক জীবনের উদ্ধে যে প্রেমের এক মন্দাকিনী আছে, তাহার সরসত তাহাকে মুগ্ধ করিয়াছিল। যদি এই প্রেম শুধু দেহের লালস-মুলক হইত, তবে কবি এমনভাবে এই প্রণয়ী-যুগলের চিত্র অঙ্কন করিতে পারিতেন না। মাঞ্জুর মা গৃহত্যাগ করিলে মণিরের যে চিত্র ফুটিয়াছে, তাঙ্গও অপরূপ। মণির তাহার সমস্ত হৃদয় দিয়া স্ত্রীকে ভালবাসিত, সেই অনাবিল ভালোবাসায় লেশমাত্র সন্দেহের অবকাশ ছিল না । সে মুহূৰ্ত্তের জন্ত ভাবিতে পারে নাই যে, তাহার এত সাধের মাঞ্জুর ম৷ কোন গুপ্ত-প্রণয়ীর সঙ্গে পলাইয়া গিয়াছে। সে বৃদ্ধ হইলে কি হয়—