বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:প্রাচীন বাঙ্গলা সাহিত্যে মুসলমানের অবদান.djvu/১৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8 প্রাচীন বাঙ্গলা সাহিত্যে মুসলমানের অবদান এই দেশ জৈন গুরুদের নিকট অহিংসার পাঠ গ্রহণ করিয়াছিল,—বৌদ্ধগণের নিকট তাহারা ত্যাগ ও নিবৃত্তির শিক্ষা পাইয়াছিল,—তাহার। হিন্দু ও বৌদ্ধ তান্ত্রিকগণের নিকট দেহ-তত্ত্বের বিশ্লেষণ শিখিয়া হঠযোগের নানাপ্রকার কসরৎ ও ফকির কেরামত আয়ত্ত করিয়াছিল এবং বৈষ্ণবগণের নিকট ভক্তিবাদ ও ভগবৎ-প্রেম শিখিয়া জগৎ মাতাইয়াছিল। পালরাজগণের উৎসাহে ইহারা ভাস্কৰ্য্য ও চিত্রবিদ্য। আয়ত্ত করিয়া শিল্পাচার্য্য হইয়াছিল এবং পরিশেষে মুসলিম-সভ্যতা ইহাদিগকে সঙ্ঘবদ্ধ করিয়া জাতিভেদ-বিরোধী উদার সমাজনীতি ও ব্যবহার-সাম্য শিখাইয়াছিল। একাদশ শতাব্দীর তিববতীয় “পগ-সাম্-জন-জাঙ্গ পুস্তকে লিখিত আছে—“স্থাপত্যে ও চারুশিল্পে বাঙ্গালীর নাম সৰ্ব্বোচ্চ, তৎপর মেওয়ার ও তিববতবাসীদের ও সৰ্ব্বশেষ চীনাদের ** বঙ্গীয় জনসাধারণের অধিকাংশই কৃষক, সুতরাং জন্মভূমির সঙ্গে অতি ঘনিষ্ঠভাবে ইহাদের নাড়ীর সম্বন্ধ । বংশ-পরম্পরায় তাহদের কুটার বাঙ্গালার ফুল-পল্লবে ঘিরিয়া রাখিয়াছে । তাহারা বহুকাল বাঙ্গালা দেশের কোমল হাওয়া ভোগ করিয়া—এদেশের বেলা, যুই, কুন্দ ও নব-মল্লিকার সুবাসের মধ্যে বাস করিয়া বাঙ্গালী হইয়। গিয়াছে। বাঙ্গালার শস্ত-স্যামল মাঠের সঙ্গে তাহাদের যুগ যুগের অন্তরঙ্গত ও প্রীতির সম্বন্ধ,—বাঙ্গালার বংশ-লতা ও বেণু-কুঞ্জ তাহাদিগকে বাশীর সুর-লহরীর করুণ-গীতি শিক্ষা দিয়াছে। তাহার এই দেশের সবুজ ক্ষেত্ৰজাত দেব-ভোগ, রাজ-ভোগ প্রভৃতি শত প্রকারের শালি-ধান্তের অন্নে পরিতৃপ্ত হইয়। বাঙ্গালী হইয়া গিয়াছে। তাহার ব্রহ্মপুত্র, অজয়, কংশ, ধনু, ভৈরব, ভাগীরথী, পদ্মা, ধলেশ্বরী, মধুমতী, যমুনা, ফুলেশ্বরী, বিদ্যাধরী প্রভৃতি মহানীরা নদীর বিশাল সিকতা-ভূমিতে ভিন্নাঞ্জন-সদৃশ মেঘপংক্তির মধ্যে—পরিদৃশুমান বিরাট

  • ঢাকা মিউজিয়মের স্থাপত্য-নিদর্শন-সম্বন্ধীয় ডাঃ নলিনী কান্ত ভট্টশালীর পুস্তকের ভূমিকায় ষ্টেপলটন সাহেবের উক্তি ।