প্রাচীন বাঙ্গল সাহিত্যে মুসলমানের অবদান )*○ মনসুর ডাকাতকে দেখিয় পান্ধী-বাহকের ভয়ে পলাইয়া গেল অন্ত লোকজন একটু দূরে ছিল । ডাকাত বাঘের মত লাফ মারিয়া পান্ধীর উপর পড়িল এবং আয়রা বিবির কানের কর্ণফুল কাড়িয়া লইল এবং নাকের নথ জোর করিয়া টানিয়া ছিনাইয়া লইতে নববধূর নাক রক্তাক্ত হইয়া গেল। কিন্তু মনসুর ডাকাত সেদিন আয়র বিবির রূপ দেখিয়া ভুলিল । বরযাত্রীরা দলে পুরু ছিল, সে ভয়ে ঝোপের মধ্যে পলাইয় গেল । কিন্তু সেই হইতে কি করিয়৷ আয়র বিবিকে পাইতে পারে, তাহার চেষ্টায় লাগিয়া গেল । আয়র বিবির স্বামী আজিম বাণিজ্যের জন্ত বিদেশে গিয়াছিলেন ; আয়রা বিবি এক ঘরে শুইয়া কেবল র্তাহার কথা ভাবিয়। কাদিতেন। তিন মাস এইভাবে চলিয়া গেল—এক রাত্রে আয়র বিবি গভীর ঘুমে শয্যায় গুইয়াছিলেন ; কৌশলে সিদ কাটিয়া মনম্বর তাঙ্গার গৃহে প্রবেশ করিল, মোমবাতি জ্বালাইয়৷ বিবির অতি সুন্দর মুখখানি পাগল হইয়। দেখিতে লাগিল। দ্বীপের তীব্র প্রভা চোখের উপর পড়ায় আয়র জাগিয় উঠিলেন— ‘চমকি জাগিয়া কল্প কঁপে ঘনে ঘন। বারুদের ঘরে আগুন লাগিল যেমন ৷” মন্স্তুর তাহাকে প্রেম নিবেদন করিল। ভীতা আয়রা চীৎকার করিয়া পাড়া জাগাইয়। তুলিল। তখন বহু লোকজন আসিয়া মনস্থরকে বাধিয়া ফেলিল এবং অত্যন্ত প্রতার করিয়। তাছাকে ঘোর জঙ্গলে একটা গাছের উপর ফঁাসি লটকাইয়৷ চলিয়া গেল । “কেহ চুল টানে কেহ নাকে মারে ঘুষি। হাতের সুখ কইরা লৈল যার যেমন খুলী।” কিন্তু মনম্বর মরে নাই, সে আস্তে আস্তে গাছ হইতে নামিল। বিষম প্ৰহারে সে মৃতপ্রায় হইয়াছিল, কিন্তু এবারকার জন্ত সে বাচিয় গেল।
পাতা:প্রাচীন বাঙ্গলা সাহিত্যে মুসলমানের অবদান.djvu/১৩২
অবয়ব