বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:প্রাচীন বাঙ্গলা সাহিত্যে মুসলমানের অবদান.djvu/১৬৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

প্রাচীন বাঙ্গল সহেত্যে মুসলমানের অবদান > « ዓ চিনিয়া সাশ্রনেত্রে আলিঙ্গনাবদ্ধ হইয়া রহিল। আলাল বলিল,— “চল ভাই, আমাদের রাজত্ব ফিরিয়া পাইয়াছি। তোমার সিংহাসন প্রস্তুত আছে, উভয়ে মিলিয়া আমাদের পৈতৃক-রাজ্য ভোগ করি।” দুলাল বলিল,—“আমি যে এখন পাকা গৃহস্থ, মদিন আমাকে প্রাণের তুল্য ভালবাসে এবং দ্বাদশ বর্ষ বয়স্ক পুত্র সুরুজ আমার কলিজার রক্ত । আমি এই স্নেহ-মায় দিয়| গড় বাড়ীঘর কিরূপে ছাড়িব ?” আলাল বলিল—“তুমি স্ত্রীকে তালাক দিয়া যাও, তাহা হইলে ধৰ্ম্মের চক্ষে তুমি পতিত হইবে না। তাহাদের যথেষ্ট সম্পত্তি আছে, মদিন পুনরায় বিবাহ করিতে পারিবে এবং তাহার ও তোমার পুত্রের জীবিক-নিৰ্ব্বাহে কোন কষ্টই হুইবে না। তুমি চাষার মেয়ে বিবাহ করিয়াছ, একথা প্রকাশ হইলে যে, আমাদের উচ্চ-বংশের মর্য্যাদা একেবারে লুপ্ত হইবে।” নানারূপে বাধ্য হইয়া, অত্যন্ত দ্বিধা-সম্পন্ন মনের অবস্থায় দুলাল স্বীকৃত হইল এবং মদিনাকে একখানি তালাকনাম পাঠাইয়া দিয়া নিজের দেশে চলিয়। গেল । খুব ধুমধামের সহিত দুই দাতা সেকেন্দর বাদশাহের দুই কন্যাকে বিবাহ করিল। প্রথমতঃ মদিন তালাকনামা বিশ্বাসই করে নাই। সে বুঝিয়াছিল, ইহ। তাহার স্বামীর একটা রহস্যমাত্র । কিন্তু বহুদিন গত হইলেও যখন স্বামী ফিরিয়ু আসিল না, তখন সে তাহার এক সম্পকিত ভ্রাতাকে সঙ্গে দিয়া সুরুজকে ফুলালের নিকট পাঠাইয়া দিল । দুলালের সঙ্গে প্রাসাদের বাহিরে তাহাদের দেখা হইলে—দুলাল অতি নিষ্ঠুরভাবে তাহাদিগকে তাড়াইয়া দিয়া বলিল—“আর এক মুহূৰ্ত্তও তোমরা এখানে থাকিও ন । তাহা হইলে আমার সমস্ত সন্ত্রম নষ্ট হইবে এবং লজ্জায় মাথা কাট যাইবে।” কাদিতে কঁাদিতে সুরুৎজামাল বাড়ীতে ফিরিল, তাহার মায়েয় মাথায় বাজ ভাঙ্গিয়া পড়িল। মদিনা পাগল হইয়া মৃত্যুমুখে পতিত হইল।