প্রাচীন বাঙ্গল সাহিত্য মুসলমানের অবদান כי ל বিরোধীদের দ্বন্দ্ব বই আর কিছুই নহে। বহু আৰ্য্য-কুল-সস্তুত ব্যক্তি যজ্ঞ সমর্থন করিতেন না এবং অনেক তথাকথিত অনাৰ্য্য-কুলের বীরগণও ইন্দ্রের পক্ষে যুদ্ধ করিয়াছিলেন। একদিকে ত্রস নামক অনাৰ্য্য-রাজ ইন্দ্রের অন্তরঙ্গ সুহৃদু ছিলেন, অপরদিকে দাস-রাজ নমুচি (অনার্য্য) যজ্ঞ বিরোধী ছিলেন এবং ইন্দ্রের সহিত অনেক যুদ্ধ-বিগ্ৰহ করিয়াছিলেন। আর্য রাজা স্বর্ণ ও চিত্ররণ যজ্ঞবিরোধী ছিলেন ; বহু যুদ্ধের পর ইন্দ্র ইহাদিগকে বধ করেন। আর্য্য-শাখা-ভূক্ত পণি জাতি ফিনিসিয়ানদের একশ্রেণী বলিয়৷ স্বীকৃত হইয়াছেন ; ইহারা ইন্দ্রের বিরোধী ছিলেন এবং যজ্ঞ মানিতেন না। ইন্দ্রের সঙ্গে ইহাদের বিরোধ এবং তৎসম্বন্ধে সরমা নামী পণিরমণীর দৌত্যের কাহিনী ঋগ্বেদে বর্ণিত আছে। ভারতের ইতিহাস আলোচনা করিলে দেখা যায়, বৈদিক সময়ে যাজ্ঞিক ও যজ্ঞবিরোধীদের মধ্যে সাংঘাতিক যুদ্ধ-বিগ্রহের পরে পুনরায় হিন্দু ও জৈনদের মধ্যে বিষম কলহ হইয়া গিয়াছে। রামায়ণে কথিত আছে— মান্ধাত একজন জৈন-শ্রমণকে গুরুতর শাস্তি প্রদান করিয়াছিলেন ।* “হস্তিনা পীড্যমানোপি ন গচ্ছেৎ জৈনমন্দিরম্” প্রভৃতি প্রচলিত শ্লোকে এই কলহের আভাস পাওয়া যায়। হিন্দু ও বৌদ্ধের মধ্যে সাম্প্রদায়িক যুদ্ধ বিগ্রহ চরমে উঠিয়াছিল। সম্ভবতঃ, বৌদ্ধ-পালরাজাদের অত্যাচারে শত শত বৈদিক ব্রাহ্মণ বঙ্গদেশ ত্যাগ করিয়া গুজরাট্র ও দক্ষিণাত্যে উপনিবেশ স্থাপন করিয়াছিলেন। + সেই যুগের ব্রাহ্মণগণ অঙ্গ-বঙ্গ-কলিঙ্গ ও মগধাদি বৌদ্ধভাবাপন্ন স্থান বর্জন করিয়া আর্য্যাবর্তের হিন্দুসমাজে এই দেশকে একরূপ পতিত বলিয়া নির্দেশ করিয়া ছিলেন (“অঙ্গ-বঙ্গকলিঙ্গাংশ্চ সৌরাষ্ট-মগধানি চ তীর্থযাত্রাং বিন গচ্ছন, পুনঃ সংস্কার
- *রামায়ণ"
‘বৃহৎবঙ্গ', ৭১, ৮৬, ৮৮ পৃষ্ঠা