বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:প্রাচীন বাঙ্গলা সাহিত্যে মুসলমানের অবদান.djvu/২০৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১৯৪ ' প্রাচীন বাঙ্গল সাহিত্যে মুসলমানের অবদান বঁধুয়ার ঠাণ্ড মুখ ন জুড়াইল পরাণে । সেই তুষের আগুনে হিয়া জলে রাত্রে দিলে। তুমি বঁধু মাছ মারিত, চুপত্নী ধরতাম আমি। জলেরে যাইতাম যখন সঙ্গে যাইতা তুমি। গাঙ্গের কুলেতে শাক বাইছা তুলতাম আমি। রান্ধ্যা দিতাম পরিপাট সুখী হইভ ভুমি। বঁধুর যত অঙ্গের ব্যাধি মোর অঙ্গে দেও আইন্যা। বধুর ব্যাধি দূর করিয়া স্থির কর মোর হিয়া ॥ বধু মোর চিকণ কাল গলার তুলসী। সেই বধু পরাণে মৈলে কেমনে আমি বাচি ॥ * যেমন কোন বৃক্ষের মূল খুড়িলে তাহার স্বক্ষ স্থঙ্ক শিকড় কোথা দিয়৷ কত দূর গিয়াছে, তাহা টের পাওয়া যায়। এই বিরাটু পল্লী-সাহিত্য বিশ্লেষণ করিলে প্রাচীন বঙ্গ-সাহিত্যের সমস্ত দিকদিয়া তাহার স্বরূপ, উৎপত্তি ও বিকাশের পরিচয় পাওয়া যাইবে । “ঢল ঢল কাচ। অঙ্গের লাবণী, অবনী বহিয়া যায়” ।—প্রভৃতি জ্ঞানদাসের পদে আমরা মুগ্ধ । কিন্তু এই পল্পী-সাহিত্যের সর্বত্র—কি মুসলমান, কি হিন্দু উভয় শ্রেণীর গাথায় নানা ছন্দে এই ভাবটির দৃষ্টান্ত বহুবার পাইয়াছি। পল্লী-গীতি-কারদের মধ্যে অল্প সংখ্যকই মহাজন-পদাবলীর পূর্ববৰ্ত্ত কিন্তু বেশীর ভাগই পরবর্তী। সুতরাং মনে হইতে পারে যে, পল্লী-কবিরা বৈষ্ণব-পদকৰ্ত্তাদের খনি হইতে উহা কুড়াইয়া পাইয়াছেন। কিন্তু তাহা কখনই নহে। বৈষ্ণব সাহিত্য ভগবৎ-ভক্তির রূপক, কিন্তু বাঙ্গলা পল্পী-সাহিত্য বাস্তবতাময় । উহা ভক্তি বা ভগবৎ-প্রেমের ধার ধারে না। এই একটি ব্যাপার নহে, বৈষ্ণব-সাহিত্যের নানা অংশের সঙ্গে পল্লীকথার যে একটা সাদৃশু আছে,

  • মুসলমান কবি লিখিত—“সুন্দরী কন্যার বয়ান ।”