প্রাচীন বাঙ্গলা সাহিত্যে মুসলমানের অবদান సెఏ কোন সাহিত্যিক-কলা-কৌশল প্রদর্শিত হয় নাই, বরং কাহিনীগুলি কতকটা উদ্ভট হইয়াছে। তথাপি এই সকল প্রচেষ্টায় দেখা যাইবে—দুই ভিন্ন ধৰ্ম্মমত পোষণ করিয়া হিন্দু ও মুসলমান পরম্পরের সঙ্গে প্রীতির সহজ সম্বন্ধ স্থাপন করিবার জন্ত বাহু সম্প্রসারণ করিতে ব্যগ্র। ‘কালু-গাজি ও চম্পাবতী’ কাব্যে এবং 'মল্লিক' কাব্যের মুকুটরায়ের কাহিনীতে ও এই শ্রেণীর আরও কোন কোন কাব্যে হিন্দুরাজার সমস্ত প্রজাসহ ইসলাম অবলম্বন করিবার কাহিনী প্রদত্ত হইয়াছে। তন্মধ্যে মল্লিকা’ কাব্যখানি সরসতা ও বর্ণনা-কৌশলে খুব জোরের কাব্য হইয়াছে । রাজকুমারী মল্লিক। হানিফের নিকট পরাজিত হইয় তাহার অঙ্কশায়িনী হইলেন এবং রাজ বরুণ র্তাহার সমস্ত প্রজাসহ ইসলাম গ্রহণ করিলেন । এই সকল কথ। গীতিকাটিতে লিপিবদ্ধ হইয়াছে। কিন্তু ধৰ্ম্ম-প্রচারার্থ লিখিতকাব্যে কোথাও সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষ ও নিৰ্ম্মমতা নাই । ‘সোনাবিবি-র পালাটির রচনাকারীর নাম পাওয়া যায় নাই, তবে তিনি যে মুসলমান ছিলেন, তাহাতে সন্দেহ নাই। এই পালাটি সংগ্ৰহ করিয়াছিলেন ময়মনসিংহের কেন্দুয়া আইথর গ্রামবাসী চন্দ্রকুমার দে । ময়মনসিংহের কাটিহালী নিবাসী রহমান সেখের নিকট হইতে তিনি এই পালার অনেকাংশ পাইয়াছিলেন। কবির বাড়ী ছিল শ্ৰীহট্ট জেলায় বানিয়চঙ্গ নামক প্রসিদ্ধ পল্লীতে—ভেরামনা নদীর তীরে । বানিয়াচঙ্গের দেওয়ান জুমন খ। দয়া করিয়া তাহাকে কতকটা জমি দিয়া বাড়ী-ঘর করিয়া দিয়াছিলেন। কবি লিখিয়াছেন—“মা-বাপে দিছে জন্ম, তিনি দিছেন ভাত ” কবি যথারীতি আল্লা-নিরঞ্জনকে বন্দনা করিয়া ওস্তাদের পায়ে শ্রদ্ধাঞ্জলি দিয়াছেন ; তারপর পীর-পয়গম্বরদিগকে মাথা-নোয়াইয়া বন্দনা করিয়াছেন। এই নাথ-সম্প্রাদয়ভূক্ত এক বিপুল জনসাধারণ ইসলাম গ্রহণ করিয়াছিল, তাহা আমি পূর্বেই প্রমাণ
পাতা:প্রাচীন বাঙ্গলা সাহিত্যে মুসলমানের অবদান.djvu/২০৮
অবয়ব