পাতা:প্রাচীন বাঙ্গলা সাহিত্যে মুসলমানের অবদান.djvu/২২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

প্রাচীন বাঙ্গল সাহিত্যে মুসলমানের অবদান ১৩৮ লিখিয়াছেন—“বৌদ্ধ পারিভাষিক শব্দগুলি জনসাধারণের ভাষা হইতে অন্তহিত হইয়াছে। ষে জনপদে (পূৰ্ব্ববঙ্গে ) এক কোটির অধিক বৌদ্ধ এবং ১১৫০০ ভিক্ষু বাস করিত সেখানে একখানি বৌদ্ধগ্রন্থ ত্রিশ বৎসরের চেষ্টায় পাওয়া যায় নাই। যে পূৰ্ব্ব-ভারত বৌদ্ধধৰ্ম্মের প্রধান লীলাক্ষেত্র ছিল, তথায় বৌদ্ধধৰ্ম্মের যে অস্তিত্ব ছিল, তাহাও য়ুরোপীয় প্রত্নতাত্বিকগণের চেষ্টায় অধুনা আবিষ্কার করিতে হইয়াছে।” (Discoveries of Living Buddhism in Bengal, p. I.) এদিকে শত শত ডোমাচাৰ্য্য ও হাড়ি জাতীয় তান্ত্রিক বৌদ্ধশ্রমণকে হিন্দুর চূড়ান্ত শাস্তি দিয়া সমাজের অতি অধস্তন স্থানে নিপাতিত করিয়াছেন। মহত্তর বৃত্তিপ্রাপ্ত মেথরেরাও হয়ত বৌদ্ধশ্রমণ ছিল। হিন্দুসমাজে চণ্ডালদের যে কাজ, তাতাই বৌদ্ধ তান্ত্রিকের জন্ত নিয়োজিত হইয়া থাকিবে । কোন স্মৃতি বা শাস্ত্রাঙ্কুশাসনে মেথর ও ডোম-হাড়ির নাম নাই ; ইহার তান্ত্রিক ছিলেন এবং মলমূত্র ও মৃতদেহ লইয়া নানারূপ বীভৎস সাধন করিতেন, তজ্জন্তই হয়ত এই শাস্তি। অথচ এককালে যে ইহার বৌদ্ধ মন্দিরের পুরোহিত ছিলেন, তাহার প্রমাণ আছে। হাড়ি-সিদ্ধা—গোপীচন্দ্র রাজার গুরু ছিলেন এবং এখনও ডোমের হারিতী দেবীর (শীতলা ) পূজক এবং এখনও কোন কোন স্থানে ডোম ও হাড়ির কালী-পূজার পৌরোহিত্য করিয়া থাকেন । বৌদ্ধ দোহা ও গানে ডোমাচাৰ্য্যদের প্রাধান্তের প্রমাণ আছে। ইহা ছাড়া হিন্দুরা বৌদ্ধ কীৰ্ত্তি একেবারে লোপ করিবার জন্য যেখানে যেখানে তাহাদের প্রাচীন কীৰ্ত্তি ছিল. তাহা মহাভারতোক্ত পঞ্চপাণ্ডব অথবা আর কোন হিন্দু রাজ-রাজড়ার সম্পকিত এইরূপ পরিকল্পনার দ্বার বৌদ্ধাধিকারের চিহ্নমাত্র লোপ করিবার চেষ্টা পাইয়াছিলেন। এখনও অনেক মন্দিরে বুদ্ধ-বিগ্রহ বিষ্ণু-মূৰ্ত্তিরূপে পূজিত হইয়া থাকে। আশ্চর্য্যের বিষয় এই—এক স্থানে বুদ্ধ বিগ্রহকে পুরোহিতেরা কালী বলিয়া