পাতা:প্রাচীন বাঙ্গলা সাহিত্যে মুসলমানের অবদান.djvu/২২৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

প্রাচীন বাঙ্গলা সাহিত্যে মুসলমানের অবদান S > ○ পায় তাহাকে অবলম্বন করিয়া নিজের লীলা-খেলা দেখায়—এপ্রেমও তেমনই পাত-বাহার গাছের মত ইহার বাহ্যিক রূপ আছে, কিন্তু ইহা পরিণামে ফুল কি ফল কিছুই দেয় না—“দেখতে অতি বড় লাল, মনে ভাবি পাব মাল পাপড়ি গুলি খুলে দেখি মধু নাই তার, শুধুই তুলে।” এই প্রেমকে রোমাটিক নাম দিতে চাও দিও। আমাদের তরুণ কবিদের কেহ কেহ এই পাঠশালার ছাত্র । এখনকার অবিশ্রান্ত ও অক্লান্ত কৰ্ম্মঠতার দিনে যাহার প্রেমকে শুধু সাময়িক আনন্দের জন্ত চান, তাহার এইটুকুতে তৃপ্ত হইয়া থাকেন—অবসর মত ইহাতে একটু মনের হাওয়া পরিবর্তন করায় এবং খানিকটা সাংসারিক জালা-যন্ত্রন ভুলাইয়া দেয়, ইহা সাহিত্য জগতের আধুনিক সিনেমা । তৃতীয় শ্রেণীর প্রেম—দেহ ও মনের গণ্ডি ছাপাইয় উঠিয়াছে, ইহা আত্মিক প্রেম, ইহাতে কিছু দৈহিক, কিছু মনের উপদান অবশু থাকিবে, তাহা না হইলে জড়-জগতে উহা সম্পূর্ণরূপে একটি বায়ব্য-লতার দ্যায় হাওয়ার উপরে চড়িয়া থাকিতে পারে না, এমন-যে সুন্দর সুগন্ধি ফুলের গাছ, তাহারও কাও, শাখা ও বাকল থাকিবেই। কিন্তু সেই গাছের পরিচয় কাগু, শাখা বা বাকল নহে, ফুলই তাহার পরিচয় । এই আত্মিক-প্রেম দেহী হইয়াও বিদেহী, ইন্দ্রিয় গ্রাহ্য হইয়াও অতীক্রিয়, ইহা শুধু তপস্তার ক্ষেত্রে জন্মে, দুঃখ ও ত্যাগ ইহার মাথার মুকুট, আত্মবিস্তৃতি ও তন্ময়ত ইহার প্রাণ, ইহা সম্পূর্ণরূপে তপস্তা এবং সাধনাজাত । ইহ। কখনও পার্থিব-মুখের ভরসা দেয় না, হয়ত কঁাট-বন দেখাইয়া দেয়, কিন্তু যে ইহার ডাক শুনিয়াছে, তাহার কাছে কাটা-বন ‘ফুল বন সম’– মৃত্যু তাহার কাছে বিভীষিকা হারায়, প্রেমের জন্ত সে তিল-তুলসী দিয়৷ দেহ মন বিকাইয়া ফেলিয়াছে। আধুনিক কালের চলন্ত গাড়ীর লোক আমরা—আমাদের নানা কাজ। জগতে অর্থের জন্ত, স্বার্থের জন্ত ছুটাছুটি