প্রাচীন বাঙ্গলা সাহিত্যে মুসলমানের অবদান ૨ઉઃ বর্ণনা করিবে ? তাহার কাছে কৃষ্ণের রূপ মিথ্যা এবং তুমিও যখন চক্ষুদিয়া তাহাকে দেখ নাই, কর্ণদ্বারা তাহার বাক্য শোন নাই, ত্বক, দ্বারা তাহার স্পর্শ অনুভব কর নাই, তখন তোমার নিকটও কৃষ্ণ-রূপ মিথ্যা ।” শিষ্য—“এখন আমি বুঝিতেছি, কৃষ্ণ-রূপ আমার নিকট মিথ্যা।” গুরু—“মিথ্যাবাদী ব্রাহ্মণের শৈশব হইতে লোকদিগকে নানা সংস্কারের জালে আবদ্ধ করে। এই সংস্কারের জন্ত তাহার উপবীত গ্রহণ করে, যজ্ঞাদি করিয়া পশু বিনষ্ট করে এবং নানারূপ মিথ্যা উপায় অবলম্বন করিয়া স্বর্গে যাইবার প্রত্যাশ করে । তাহদের বেদ মিথ্যা, শাস্ত্র এবং তাহাদের বর্ণিত দেবতা মিথ্যা, তাহারা নিজের মনের দ্বারা অনুভব করে নাই, জন্ম বধির যেরূপ পিতামাতার নাম উচ্চারণ করিতে পারে না, জন্মান্ধ সেরূপ কোন কল্পনা করিতে পারে না । সেইরূপ প্রত্যক্ষ জ্ঞান-ব্যতিরেকে কেহ ঈশ্বর-জ্ঞান লাভ করিতে পারে না।” শিষ্য—“আমি এখন বুঝিতে পারিতেছি যে, বেদ, যাগযজ্ঞ, কৃষ্ণপূজা সব মিথ্যা (** "শূন্তপুরাণে ধৰ্ম্মঠাকুরের পূজকেরা আপনাদিগকে সিদ্ধৰ্ম্মী নামে পরিচয় দিয়াছে। এই সিদ্ধস্ট্রী’ অর্থে—বৌদ্ধ। যদিও ‘শৃষ্ঠপুরাণ’ বহু পুরাতন পুস্তক, তবুও বর্তমানে ইহার যে সংস্করণ প্রকাশিত হইয়াছে, তাহাতে পঞ্চদশ শতাব্দীতে লিখিত নিরঞ্জনের রুষ্যা নামে একটি অধ্যায় সংযুক্ত আছে। ইহাতে লিখিত আছে,—“মালদহে ও হুগলী জেলার যাজ পুর নামক এক গ্রামে সদ্ধক্ষ্মীরা ষোলশত ঘর বৈদিক ব্রাহ্মণের দ্বারা ভীষণরূপে উৎপীড়িত হইয়াছিল ; তাহাতে তাহাদের ‘ত্রাহি’ ‘ত্রাহি” প্রার্থনায় নিরঞ্জন তাহার দলবলসহ অবতীর্ণ হইয়া ব্রাহ্মণদিগকে শাস্তি দিয়াছিলেন। সেন-রাজত্বকালে এদেশের বিপুল বৌদ্ধ-জনসাধারণকে
- "জ্ঞানাদি সাধনা।”