পাতা:প্রাচীন বাঙ্গলা সাহিত্যে মুসলমানের অবদান.djvu/৪৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

প্রাচীন বাঙ্গলা সাহিত্যে মুসলমানের অবদান రిగి জাতে আমি ফিরিঙ্গী”—এই ভাবের শাক্ত সঙ্গীতও গাহিতেন। কিন্তু তিনি খৃষ্ট ধৰ্ম্ম ছাড়েন নাই। আমি নিজে দেখিয়াছি, ত্রিপুরাবাসী গোলমাহমুদ স্বীয় দলবল লইয়া স্ব-রচিত কালী-বিষয়ক নানা সঙ্গীত বি বিট রাগিণীতে আসরে গাহিতেন। তাহার রচিত—“উন্মত্তা, ছিন্নমস্ত এ রমণী কা’র—” প্রভৃতি গানের রেশ এখনও আমার কানে বাজিতেছে। কিন্তু গোলমাহমুদকে মুসলমানেরা কখনও 'কাফের’ বলেন নাই। তিনি স্বধৰ্ম্মনিষ্ঠ ছিলেন । সৈয়দ জাফর শাহের কালী-বিষয়ক গান অনেকেই জানেন । পূৰ্ব্বোক্ত পীরদের সম্বন্ধীয় কাব্যের মধ্যে একজন মাত্র কবির রচিত একখানি কাব্যের কথা উল্লেখ করিব । তাহার রচিত ‘সত্যপীরের কথা’ সমস্ত সত্যপীর-সম্বন্ধীয় কাব্যের আদি । উহা পঞ্চদশ শতাব্দীর শেষভাগে একজন মুসলমান পীরের আজ্ঞায় রচিত হয়। এই কবির নাম—কঙ্ক এবং তাহার রচিত কাব্যের অপর নাম—‘বিদ্যাসুন্দর’ । যে কয়েকখানি ৰাঙ্গল ‘বিদ্যাসুন্দর’ পাওয়া গিয়াছে, তাহার মধ্যে এইখানি সৰ্ব্বপ্রথম রচিত হইয়াছিল। বিদ্যাসুন্দর’ নামের সঙ্গে যে কুরুচির ভাব জড়িত, এই কাব্যখানিতে তাহ আদেী নাই। কঙ্ক ময়মনসিংহের কোন গ্রামবাসী গুণরাজ নামক ব্রাহ্মণের পুত্র । কিন্তু দৈবদোষে মুরারি নামক এক চণ্ডাল ও তৎপত্নী কৌশল্যার যত্নে অতি শৈশবে লালিত-পালিত হন। ব্রাহ্মণ-সমাজে তাহার কোন স্থান ছিল না । কিন্তু পঞ্চ বর্ষ বয়সে তাহার চণ্ডাল ধৰ্ম্মপিতা এবং চণ্ডালিনী মাতা স্বল্প সময়ের ব্যবধানের মধ্যে স্বৰ্গীয় হইলে— বালক একেবারে সকল সমাজের পরিত্যক্ত হয় । একে ত অপয়া শিশু’ বলিয়া কোন দয়ালু লোক কুসংস্কার বশতঃ এই বালকের ভার গ্রহণে সম্মত হ’ন নাই, তারপর সে চণ্ডাল-পালিত । সুতরাং কে তাহাকে গ্রহণ করিবে ? এই বালক তাহার চণ্ডাল পিতামাতার শ্মশানে দুই দিন দুই