8 o প্রাচীন বাঙ্গলা সাহিত্যে মুসলমানের অবদান ‘সত্যপীরের পাঁচালী’ কঙ্ককে লিখিতে বলিয়া একদিন সেই পীর বিপ্রগ্রাম হইতে চলিয়া গেলেন। তারপর— “গুরুর আদেশ শুনি, লিখিয়া পাঁচালী আনি, পাঠাইল দেশ আর বিদেশে । কঙ্কের লিখন কথা, ব্যাপ্ত হৈল যথা তথা, দেশ পূর্ণ হৈল তার যশে ৷ কঙ্ক আর রাখাল নহে, ‘কবি কঙ্ক’ সবে কহে, শুনি গগ মানে চমৎকার। হিন্দু আর মুসলমানে, সত্যপীরে সবে মানে, পাঁচালীর হৈল সমাদর ॥ যেই পূজে সত্যপীরে, কঙ্কের পাঁচালী পড়ে, দেশে দেশে কঙ্কের গুণ গায় ।” গর্গের নিকট কঙ্ক সংস্কৃত, বাঙ্গলা ও পালি রীতিমত শিক্ষ। করিয়াছিল । এখন সে কবিত্ব গুণে সৰ্ব্বত্র আদৃত হইয়াছে দেখিয়া, গর্গ তাহাকে ব্রাহ্মণসমাজে তুলিতে চেষ্টা করিলেন । এইবার অবস্থা সঙ্গীন হইয় দাড়াইল । ব্রাহ্মণ-পণ্ডিতদিগকে গর্গ স্বগৃহে এক প্রকাশু সভায় আহবান করিয়া—“কঙ্ক ব্রাহ্মণ-সমাজে গৃহীত হোক্ ৷”—এই প্রস্তাব করলেন —“কঙ্ক ব্রাহ্মণের সন্তান, আপোগণ্ড অবস্থায় সে চণ্ডালের গুহে পালিত হইয়াছিল - তাহার তখন কোন জ্ঞান হয় নাই এবং সেজন্ত সে দায়ী হইতে পারে ন! ”—এই ছিল গর্গের যুক্তি । নন্দু নামক এক পণ্ডিত প্রতিবাদী গোড়া ব্রাহ্মণের দলে নেতা হইল। বহু জটলা ও তর্ক-বিতর্ক চলিল, কিন্তু গৰ্গ ছিলেন পণ্ডিতশিরোমাণ—তাহার সহিত বিচারে কেছ আঁটিয়া উঠিতে পারিল না। তাহার তর্কে পরাভূত হইয়৷ গোপনে কঙ্কের সৰ্ব্বনাশের ষড়যন্ত্র করিতে লাগিল—
পাতা:প্রাচীন বাঙ্গলা সাহিত্যে মুসলমানের অবদান.djvu/৪৯
অবয়ব