পাতা:প্রাচীন বাঙ্গলা সাহিত্যে মুসলমানের অবদান.djvu/৫৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

প্রাচীন বাঙ্গল সাহিত্যে মুসলমানের অবদান 8& নাই। সেন-রাজত্বকালে ইহার অনাচরণীয় হইয়। একেবারে পর হইয়া রহিল । শুধু তাহাই নহে, সংস্কৃত ভাষার অত্যধিক আদরে রাজসভা হইতে মাতৃভাষা তাড়িত হইল। যদি কেহ ‘রামায়ণ’ বা পুরাণ-এর কথা বাঙ্গলা ভাষায় প্রচার করে এবং শ্রবণ করে, তবে সে রৌরব-নরকে পতিত হয়—ইহাই হইল অনুশাসন—“অষ্টাদশ পুরাণানি রামস্ত চরিতানি চ। ভাষায়াং মানব: শ্রাত্ব রৌরবং নরকং গচ্ছেৎ ॥” সুতরাং প্রজ সাধারণের মুখের কথা কাড়িয়া লইয়া তাহাও যেন আস্তাকুঁড়ে ফেল: হইল, তাহাদের শিক্ষার পথ একেবারে বন্ধ হইল। কবি কাশীদাস প্রতি অধ্যায়ের শেষে—“মস্তকে বাধিয়া ব্রাহ্মণের পদ-রজঃ কহে কাশীদাস—” প্রভৃতি ভাবে ব্রাহ্মণের বন্দনা করিয়াও তাহাদিগকে খুসী করিতে পারেন নাই ; রামায়ণের অনুবাদক কৃত্তিবাস এবং মহাভারতের অনুবাদক কাশীদাসের উপর অভিসম্পাত করিয়; ভট্টাচার্যের এই প্রবাদ-বাক্য রচনা করিলেন—“কৃত্তিবেসে, কাশাদেশে আর বামুন ঘেষে, এই তিন সৰ্ব্বনেশে ।”* বঙ্গের যে অবদান, শিউলী ফুলের মত অজস্র ও সুন্দর। সেই রূপকথা ও গীতিকথা ( যাহার কিয়দংশ গ্ৰীম ভ্রাতৃদ্বয় বিলাতে প্রচার করিয়াছেন ), যে মালঞ্চমালা, কাঞ্চনমালা প্রভৃতি রূপকথার তুলনা জগতে নাই * সেই রূপকথা ও গীতিকথার পুষ্পবন ভাঙ্গিয়া পড়িল, অমৃত-কুণ্ডের খাদ যেন শুকাইয়া গেল। বঙ্গের উচ্চ-কুল-সস্তুত রমণী-সমাজে যাহারা এই সকল গীতিকথা আবৃত্তি করিত, তাহারা ‘আলাপিনী’ নামে পরিচিত ছিল। এবার আলাপিনীদের কাজ শেষ হইয় গেল। রূপকথার

  • রাজনারায়ণ বস্থর ‘সেকাল আর একাল’ । * **** “Folk Literature of Bengal” so