পাতা:প্রাচীন বাঙ্গলা সাহিত্যে মুসলমানের অবদান.djvu/৭৭

উইকিসংকলন থেকে
পরিভ্রমণে চলুন অনুসন্ধানে চলুন
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৬৮ প্রাচীন বাঙ্গল সাহিত্যে মুসলমানের অবদান অপূৰ্ব্ব বৈশিষ্ট্যের স্বষ্টি করিয়াছে—যাহাতে আমরা অনেক বিষয়ে অপ্রতিদ্বন্দিতা লাভ করিয়াছি। আমরা দেখিতে পাইতেছি, মুসলমানী-বাঙ্গলায় লিখিত বটতলার শত শত পুস্তক বাদ দিলেও বঙ্গসাহিত্যে বিশুদ্ধ বাঙ্গলায় লিখিত মুসলমান কবিদের কাব্যের সংখ্য অল্প নহে,—আরাকানের এই মগের মুলুকেও চৈতন্ত দেবের খোল-করতালের ধ্বনি বাজিয়া উঠিয়াছিল। বৈষ্ণব মহাজনদের পদাবলীর স্বরটি যেখানে বঙ্গভাষা-ভাষী লোক ছিল, সেখানেই লোকের কানে বাজিয়া তাহাদিগকে আবিষ্ট করিয়াছিল । ব্রজবুলির কোমল-কান্ত পদাবলী প্রেমবর্ণনার সময় বাঙ্গালী কবিদের সকলকে আকর্ষণ করিয়াছে । অনেক কবি আরাকান রাজ-সভায় রাধাকৃষ্ণের প্রেম সম্বন্ধে পদ-রচনা করিয়াছিলেন । আলোয়ালের উক্তরূপ পদ আমরা পাইয়াছি। কবি দৌলত কাজি লোর-চন্দ্রানী কাব্যে নায়ক-নায়িকা সম্পকিত কাহিনীতে ব্রজবুলির সুরটি লাগাইয়া কাব্যের মিষ্টত্ব বৃদ্ধি করিয়াছেন। দৌলত কাজির ‘সতী ময়না’য় ব্রজবুলিতে লিখিত অনেক পদ আছে । তাহার একটি স্থান এইরূপ-- “শাওন গগনে সঘনে ঝরে নীর। ভঞি আছন জুরাএ এ তাপ শরীর। মালিনী কি কহব বেদন ওর । লোর বিমু বাসহি বিহি ভেল মোর । মদন আসক জিনি বিজুরীর রেছ। থরকায় রজনী কম্পএ দেহ ।। ন বোল ন বোল ধাই অনুচিত বোল। আন পুরুষ লহে লোর সমতুল। ৫ বঙ্গভাষা ও সাহিত্য' ষষ্ঠ সংস্করণ ।