প্রাচীন বাঙ্গলা সাহিত্যে মুসলমানের অবদান brđ গুপ্ত সম্রাটের প্রাগ জ্যোতিষপুর জয় করিয়া মগধ সাম্রাজ্যের অন্তভূক্ত করিয়াছিলেন, কিন্তু এই দেশের দুৰ্দ্ধৰ্ষ অধিবাসীর পাল-রাজত্বে তাহদের অধীনতার পাশ ছেদন করিয়া ফেলিল, কিন্তু তাহার নামেমাত্র পালরাজাদের বগুত স্বীকার করা হইতে আপনাদিগকে সম্পূর্ণরূপে মুক্ত করিতে পারিল না । সেনদের সময়ে প্রাগ জোতিষপুরবাসীরা নানা ক্ষুদ্র রাষ্ট্রে বিক্ষিপ্ত হইয়া যায়—রাজবংশী কোচ, মেচ, চকম প্রভৃতি শ্রেণীর নেতাগণ পূৰ্ব্ব ময়মনসিংহের নানা দুৰ্গম স্থানে বাস স্থাপন পূর্বক সম্পূর্ণ স্বাধীনতা ঘোষণা করিল। এই সকল ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র রাজ্যের অধিবাসীরা বাঙ্গালাদেশে সাধারণতঃ কিরাত ও রাজবংশী নামে পরিচিত ছিল । তাহারা আর্য্যসমাজের সঙ্গে মিশিয়া গিয়াছিল। জঙ্গলবাড়ী, বোকাইনগর, গড়জরিপ, কালিয়াজুরী, মদনপুর, দুর্গাপুর প্রভৃতি স্থানে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ভূ-স্বামীরা এতটা শক্তি সঞ্চয় করিয়া প্রবল হইয়াছিলেন যে, বল্লালসেন ও লক্ষ্মণসেন বহু চেষ্টা করিয়াও তাহাদিগকে বশীভূত করিতে পারেন নাই । সেনদের লোলুপ-দৃষ্টি এই পাহাড়িয়া দেশটার উপর ছিল। বঙ্গদেশের উপান্ত-ভাগে উত্তর-পূৰ্ব্ব একটা ক্ষুদ্র দেশ তাহদের সাম্রাজ্যের বহিভূত হইয়। বিদ্রোহী থাকিবে এবং তাছাদের শক্ৰদের সঙ্গে ষড়যন্ত্র-কেন্দ্রের স্বষ্টি করিবে, ইহা তাহার ইচ্ছা করিতেন না । তাহ ছাড়া, বল্লানসেন যে সামাজিক বিপ্লবের স্বষ্টি করিয়াছিলেন, তাহাতে দেশের উচ্চ-শ্রেণীর মধ্যেও র্তাহার অনেক শক্র হইয়াছিল। এই সকল শক্রর সেনদের অধিকৃত বাঙ্গালা হইতে পলাইয়া গিয়া পূৰ্ব্ব-ময়মনসিংহে আশ্রয় গ্রহণ করিয়া র্তাহাদের বিরুদ্ধে প্রচার-কাৰ্য্য আরম্ভ করিয়াছিল । ১১৩৯ খৃঃ অব্দে বল্লালের অত্যাচারে ভীত বিরোধী-দলের অন্ততম নেতা অনন্ত দত্ত পূৰ্ব্ব ময়মনসিহের অন্তর্গত কাস্তুল গ্রামে শ্ৰীকণ্ঠ নামক গুরুকে সঙ্গে লইয়া আসিয়া বাস স্থাপন করেন—
পাতা:প্রাচীন বাঙ্গলা সাহিত্যে মুসলমানের অবদান.djvu/৯৪
অবয়ব