পাতা:প্রাচীন বাঙ্গলা সাহিত্যে মুসলমানের অবদান.djvu/৯৭

উইকিসংকলন থেকে
পরিভ্রমণে চলুন অনুসন্ধানে চলুন
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

brby প্রাচীন বাঙ্গল সাহিত্যে মুসলমানের অবদান ১৪৯১ খৃষ্টাব্দে সেরপুর গড়জরিপার দিলীপ সামন্তকে নিহত করিয়া ফিরোজ শাহের সেনাপতি মজলিস হুমায়ুন উক্ত গড় অধিকার করেন। ‘গড় জরিপা’ শব্দ ‘গড় দিলীপ’ শব্দের অপভ্রংশ। ১৫৮০ খৃষ্টাব্দে ঈশা খুঁ। মসনদ-ই-আলি জঙ্গলবাড়ীর লক্ষ্মণ হাজরাকে জয় করিয়| তথায় সুপ্রসিদ্ধ দেওয়ান বংশের প্রতিষ্ঠা করেন। অতর্কিত নৈশ আক্রমণে হতবুদ্ধি হইয়া লক্ষ্মণ-হাজর ও তাঁহার ভ্রাতা রাম হাজরা নিদ্রা ভঙ্গের পরে গুপ্ত দ্বার দিয়া পলাইয়া অদুষ্ঠ হ’ন । এই সকল দেশের লোক বাঙ্গালার অজেয় পল্লী-গীতিকা, রূপকথা ও গীতিকথা রক্ষা করিয়া আসিয়াছে ৷ বঙ্গের অপরাপর প্রদেশেও বৌদ্ধাধিকারে এই বিরাট সাহিত্যের প্রচলন ছিল, কিন্তু সমাজগুরুগণ জনসাধারণের স্বাধীন রুচি, ব্রাহ্মণ্য-বিরোধী প্রথা এবং কথিত ভাষা অগ্রাহ করিয়া তৎস্থলে পৌরাণিক বিষয় ও সংস্কৃতাত্মক কথকতা ও কীৰ্ত্তন প্রচলন করেন । তজ্জন্ত বঙ্গদেশের ব্রাহ্মণ-শাসিত অন্তান্ত স্থানে তাহা একরূপ লোপ পাইয়াছে। যে-সকল স্থান নব-ব্রাহ্মণ্যের গণ্ডির বাহিরে ছিল, সেই সেই দেশের লোকেরা এই প্রাচীন সম্পদ আঁকড়াইয়া ধরিয়া রাখিয়াছে। কিন্তু এখন ব্রাহ্মণ্য-প্রভাবের সেই যুগ-সাহিত্যের ধারা ক্রমশঃ শুকাইয়। আসিয়াছে। পূৰ্ব্ব-মৈয়মনসিংহে পূৰ্ব্বোক্ত কারণে পল্লী-গীতিকা বেশী পরিমাণে পাওয়া যাইতেছে। k , " " - কিন্তু বহু পূৰ্ব্বেই সেই দেশ ছহঁতে এই পল্লী-সাহিত্যের ধারা একেবারে বিলুপ্ত হইত, যদি ন মুসলমানগণ ইহাকে রক্ষা করিত। এক শতাব্দী পূৰ্ব্ব হইতে নব-ব্রাহ্মণ্য ধীরে ধীরে ভৈরব নদ পার হইয়া কংশ, ধনু ও ফুলেশ্বরীর তীরদেশে প্রবেশ লাভ করিয়াছে। হিন্দু-মুসলমান একত্র হইয়া যে সাহিত্যের রসাস্বাদ করিয়াছে, তাহা তাহদের মনঃপূত হয় নাই। এই গাথা-সংগ্রাহকগণ আমাকে জানাইয়াছেন—“এই সকল গীতিকথা ও