ক্রমে কন্যাদের একটু গৌরব বাড়িতে লাগিল। তাই মনু (৯. ১৩০) বলিলেন, আত্মার সমান পুত্র, পুত্রের সমান কন্যা। সেই আত্মা থাকিতে কেন অন্যে ধন হরণ করিবে?
পূর্বে নিয়ম ছিল, পুত্রহীন লোক কন্যাকে বিবাহ দিবার সময় এই নিয়মে নিয়ত করিয়া বিবাহ দিত যে এই কন্যার পুত্র তাহার মাতামহের বংশরক্ষা করিবে। মনু এই ভেদ তুলিয়া দিলেন। তিনি বলিলেন, দৌহিত্র ও পৌত্রে কোনো ভেদ নাই—
পৌত্রদৌহিত্রয়োর্লোকে বিশেষো নোপপদ্যতে। মনু, ৯. ১৩৯
কাজেই তখন হইতে নিয়ত ও অনিয়ত পুত্রিকাপুত্রভেদ আর রহিল না। মনু (৯.১৩১) বলেন, অপুত্রের সমস্ত বিষয় দৌহিত্র পাইবে।
বিবাহকালে বরকন্যা একত্র বসিয়া যে ধন আশীর্বাদরূপে পায় তাহাই যৌতক।
মনু (৯.১৯৪) যে ছয় প্রকার স্ত্রীধন বলিয়াছেন তাহা অধ্যগ্নি, অধ্যাবাহনিক, প্রীতিকর্মে দত্ত, ভ্রাতৃদত্ত, মাতৃদত্ত, পিতৃদত্ত; ইহার মধ্যে তো যৌতক নাই। অথচ মনুই (৯.১৩১) বলেন, মায়ের যাহা যৌতক তাহা কুমারী কন্যারই প্রাপ্য—
মাতুস্তু যৌতকং যৎ স্যাৎ কুমারীভাগ এব সঃ।
এই যৌতক তবে কি? বীরমিত্র বলেন, বিবাহকালে বরকন্যা একত্র বসিলে বন্ধুদের কাছে উপহারস্বরূপে প্রাপ্ত ধন, তাহাই যৌতক।[১]
জীমূতবাহনের দায়ভাগ শ্রীকৃষ্ণতর্কালংকার-কৃত টীকা সহিত ভরতশিরোমণি মহোদয় ১৯০৭ সালে সংস্কৃত যন্ত্র হইতে প্রকাশ করেন। তাহাতে দেখি, পুত্রহীন মৃতের পত্নী তাহার ভাগহারিণী হইবে। সনাভি সহোদররাও। এইরূপ সহোদর ভাই থাকিতেও পত্নীর অধিকার আছে বুঝা যায়—
তেষু সত্স্বপি পত্ন্যা ধনসম্বন্ধং বোধয়তি। পৃ ১৯০
ছেলের পুত্র না থাকিলে মাতা দায় পাইবেন। ইহাতে বৃহস্পতিরও সম্মতি আছে (ঐ পৃ ২০৫-২০৬)। বিষ্ণুশ্রুতি অনুসারে, পিতার অভাবে মায়ের অধিকার (ঐ পৃ ২০৭)।
- ↑ বীরমিত্রোদয় ব্যবহার-প্রকাশের প্রমেয়নিরূপণ প্রকরণে, Vol. vii, পৃ ৫৪৮