ন দুহিতর ইত্যেকে তস্মাৎ পুমান্ দায়াদোঽদায়াদা স্ত্রীতি বিজ্ঞায়তে তস্মাৎ
স্ত্রিয়ং জাতাং পরাস্যন্তি ন পুমাংসমিতি চ স্ত্রীণাং দানবিক্রয়াতিসর্গা বিদ্যন্তে
ন পুংসঃ পুংরোঽপীত্যেকে শৌনঃশেপে দর্শনাৎ। নিরুক্ত ৩. ৪
যাস্কের বৃত্তিতে দুর্গাচার্য দেখাইয়াছেন যে, দুহিতাও দায়াধিকারী, এতদর্থে ঋক্ও দেখাইয়াছেন। তাহার নিষ্কর্ষ আনন্দাশ্রম সংস্করণ হইতে দেওয়া যাইতেছে, ‘দুহিতা দায়াদ্যর্মহতীত্যর্থে ঋক্’ (পৃ ২০৮)। পুত্রগণ কন্যাগণ সকলেই দায়াদ ইহা এই ঋক্শ্লোকদ্বয়ে বলা হইল—
পুত্রা দুহিতরশ্চোভয়েঽপি দায়াদা ইত্যৃক্শ্লোকাভ্যামুচ্যতে। ঐ ২০৯
লোকব্যবহারেও দেখা যায়— লোকব্যবহারোঽপি মন্ত্রাণাং বিষয়ে ভবতি। ঐ ‘অঙ্গাদঙ্গাৎ' এই মন্ত্রে স্পষ্টই দুহিতারও পুত্রত্ব দেখা যায়—
অঙ্গাদঙ্গাদিত্যনেন দুহিতুঃ পুত্রত্বং স্পষ্টীক্রিয়তে। পৃ: ২১০
মনুবচনও সর্ব অপত্যেরই অধিকারত্ব সূচিত করে (ঐ ২১০)। তবে ব্রাহ্মণবচনে দুহিতাদের অধিকার স্বীকৃত হয় নাই (ঐ ২১০)। কারণ কন্যার দান বিক্রয় ত্যাগ চলে (ঐ ২১১)। মহাভারতে কন্যাবিক্রয় নিষিদ্ধ (ঐ)। আর ছেলেরও তো দান বিক্রয় ত্যাগ করা দেখা যায় (ঐ)। শৌনঃশেপ উপাখ্যানেই তাহার প্রমাণ।
যাস্কেই দেখা গেল, স্বায়ম্ভুব মনু সৃষ্টির আদিতেই বলিয়াছেন, ছেলেমেয়ের মধ্যে দায়াধিকারে ধর্মতঃ কোনো প্রভেদ নাই—
অবিশেষেণ পুত্রাণাং দায়ো ভবতি ধর্মতঃ।
মিথুনানাং বিসর্গাদৌ মনুঃ স্বায়ম্ভুবোাঽব্রবীৎ। নিরুক্ত ৩.৪
যাস্ক এই বিবাদ মিটাইতে গিয়া বলিলেন, পুত্র না থাকিলে কন্যারই এইরূপ অধিকার। পুত্রিকা বলিয়া এই দাবি। ‘সপিণ্ড ধনাধিকার পাইবে’ এই পুরাতন কথাটা লইয়া গোল বাধিল। পিণ্ড শব্দে দেহ। সেই অর্থে জ্ঞাতিরা বিত্ত পায়। আর শ্রাদ্ধে দেয় পিণ্ড অর্থ ধরিলে কন্যাও শ্রাদ্ধে অধিকারিণী। পুত্রাভাবে শ্রাদ্ধের অধিকারী বলিয়া কন্যার গৌরব পরে ক্রমে বাড়িতে লাগিল। তখনকার দিনে দত্তকপুত্রের স্থান খুবই নীচে ছিল।
তাহার পর আসিল কৌটিলীয় অর্থশাস্ত্রের যুগ। অর্থশাস্ত্র (Jolly) বলিলেন, পুত্র থাকিলে পুত্র অথবা ধর্মবিবাহে জাতা কন্যা উত্তরাধিকারী—
পুত্রবতঃ পুত্রা দুহিতরো বা ধর্মিষ্ঠেষু বিবাহেষু জাতাঃ। ৩. ৫.৬০, দায়াক্রমঃ, ৯