ধর্মবিবাহে জাত না হইলেও কন্যা অধিকারিণী হয়, তবে তখন ভাই ও সহজীবীরা পাইবে দ্রব্য এবং সেই কন্যা পাইবে রিক্থ (ঐ ৮)।[১]
আমরা প্রধানতঃ এখানে দেখিতেছি সামাজিক ইতিহাসের দৃষ্টিতে ব্যবস্থাপকদের পক্ষে তাহা জানা প্রয়োজন হইলেও আরও নানাদিকে তাঁহাদিগকে বিচার করিতে হয়।
মনুর (৯-১১৮) সিদ্ধান্ত অনুসারে পুত্রেরা যাহা পাইবে তাহার চারিভাগের একভাগ প্রত্যেক ভাই কন্যাদের দিবে। মূলে আছে কন্যা। কুল্লুক অর্থ করিলেন, অনূঢ়া ভগিনী। অনূঢ়া ভগিনী না হইলেও যে অধিকারিণী হওয়া যায়, তাহা বুঝা যায় মনুর আর-একটি শ্লোকে— সম্পত্তি বিভাগকালে ভাইদের মধ্যে জ্যেষ্ঠ বা কনিষ্ঠ যে ভাই মৃত বা সন্ন্যাসী হইবে তাহার অংশ লুপ্ত হইবে না। সহোদর ভ্রাতারা এবং সৌদর্যা ভগিনীরাও ঐ অংশ হইতে সমান ভাগ পাইবে—
ভ্রাতরো যে চ সংসৃষ্টা ভগিন্যশ্চ মনাভয়ঃ। ৯. ২১২
যাজ্ঞবল্ক্য (ব্যবহার, ৮. ১১৫) বলেন, স্বামিদত্ত বা শ্বশুরদত্ত স্ত্রীধন না থাকিলে সম্পত্তি ভাগ করিবার সময় পত্নীদেরও সমান অংশ থাকা উচিত। পুত্রদের একচতুর্থাংশ কন্যা পাইবে ইহা যাজ্ঞবল্ক্যেরও মত। যাজ্ঞবল্ক্য বলেন—
পিতুরূর্দ্ধং বিভজতাং মাতাপ্যংশং সমং হরেৎ। ব্যবহারাধ্যায়, দায়বিভাগ প্রকরণ, ৮. ১২৩
এখানে মাতারও সমানাংশ দাবির কথা স্বীকৃত। বৃহস্পতি বলেন, মায়েরা সমান অংশ, কন্যারা চারিভাগের একভাগ পাইবে—
সমাংসা মাতরস্তেষাং তুরীয়াংশশ্চ কন্যকাঃ।
বীর-মিত্রোদয় ব্যবহার প্রকাশের প্রমেয়নিরূপণ প্রকরণে দায়ভাগে সমবিভাগে পত্নীর অংশও স্বীকৃত হইয়াছে।[২]
মনু প্রভৃতি স্মৃতিকারদের সময়ে হয়তো পিণ্ডদিবার অধিকারিণী বলিয়া
- ↑ কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয় হইতে পণ্ডিত শ্রীনারায়ণচন্দ্র ভট্টাচার্য (যোগেন্দ্র-রিসার্চ প্রাইজ প্রবন্ধ) ‘হিন্দু-স্ত্রীধনাধিকার’ নামে একখানা ভালো পুস্তক বাহির করিয়াছেন। যাঁহারা এই বিষয়ে খুঁটিনাটি সব সিদ্ধান্ত জানিতে চাহেন তাঁহাদের পক্ষে এই গ্রন্থখানি পড়া উচিত। তাঁহার গ্রন্থ আইনব্যবসায়ী ও স্ত্রীধন লইয়া যাহাদের কাজ করিতে হয় তাঁহাদের পক্ষে অতিশয় উপাদেয়।
- ↑ দায়ভাগে সমবিভাগে পত্নীনামপাংশঃ, Vol. vii, পৃ ৪৪৯