পাতা:প্রায়শ্চিত্ত - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৩৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

প্রায়শ্চিত্ত OS ( সকলের হাস্ত ) কথাটা মিথ্যা নয় মহারাজ ! ( দীর্ঘনিশ্বাস ফেলিয়া ) শ্বশুরমন্দিরের সকলই সার— আহারটা, সমাদরটা ; দুধের সরটি পাওয়া যায়, মাছের মুড়োটি পাওয়া যায় ; সকলই সারপদার্থ। কেবল সর্বাপেক্ষা অসার ওই যিনি— রামচন্দ্র । ( হাসিয়া ) সে কী হে, তোমার অর্ধাঙ্গ— রমাই । ( জোড়হস্তে ব্যাকুলভাবে ) মহারাজ তাকে অর্ধাঙ্গ বলবেন না । তিন জন্ম তপস্যা করলে আমি বরঞ্চ একদিন তার অর্ধাঙ্গ হতে পারব এমন ভরসা আছে। আমার মতন পাচটা অর্ধাঙ্গ জুড়লেও তার আয়তনে কুলোয় না । [ যথাক্রমে সকলের হাস্য রামচন্দ্র । আমি তো শুনেছি, তোমার ব্রাহ্মণী বড়োই শান্তস্বভাবা, ঘরকন্নায় বিশেষ পটু ৷ রমাই। সে কথায় কাজ কী ! ঘরে আর সকল রকমই জঞ্জাল আছে, কেবল আমি তিষ্ঠতে পারি না। প্রত্যুষে গৃহিণী এমনি বোটিয়ে দেন যে একেবারে মহারাজের দুয়ারে এসে পড়ি । সকলের হাস্য রামচন্দ্র। ওহে রমাই, তোমাকে এবার যে যেতে হবে— সেনাপতিকে সঙ্গে নেব । ( সেনাপতিকে ) যাত্রার জন্য সমস্ত উদযোগ করো। আমার চৌষট্টি দাড়ের নৌকা যেন প্রস্তুত থাকে। [ মন্ত্রী ও সেনাপতির প্রস্থান রামচন্দ্র। রমাই, তুমি তো সমস্তই শুনেছ। গতবারে শ্বশুরালয়ে আমাকে বড়োই মাটি করেছিল । রমাই। আজ্ঞে হা, মহারাজের লেজ বানিয়ে দিয়েছিল । রামচন্দ্র । ( কাষ্ঠ হাসিয়া তাম্রকূটসেবন ) রমাই। আপনার এক শু্যালক এসে আমাকে বললেন, ‘বাসরঘরে তোমাদের রাজার লেজ প্রকাশ পেয়েছে । তিনি রামচন্দ্র না রামদাস ? এমন তো পূর্বে জানতাম না। আমি তৎক্ষণাৎ বললুম, পূর্বে জানবেন