পাতা:প্রেমিক গুরু.djvu/১৩৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

প্রেম-ভক্তি ১২১ ধার ধারেন না । কিন্তু ভক্তগণ লীলারস আস্বাদে লুব্ধ বলিয়া লীলা অর্থাৎ জীব ও জগৎ অগ্রাহ্য করিতে পারেন না ; কাজেই ভেদভাবও রক্ষা করিতে হয় । কিন্তু তদীয় শক্তি বা শক্তির কার্য্য জীব-জগৎ ভিন্নবৎ প্রতীয়মান হইলেও বস্তুতঃ তাহা হইতে অভিন্ন । তবে এই অভেদ যেমন অচিস্ত্য, তেমনই ভেদ-প্রতীতিগু অচিন্তনীয় ; অন্তান্ত দর্শন হইতে বৈষ্ণব-দর্শনের ইহাই বিশিষ্টতা ; গোড়া ভক্ত এই কারণ ও উদ্দেপ্ত না বুঝিয়া অন্তান্ত বৈদাস্তিক-মতের নিনা করিয়া নিজেদের মতের প্রাধান্য প্রতিপন্ন করে । আপন আপন লক্ষ্যকে স্পষ্টরূপে প্রকাশিত করাই বিচার-শাস্ত্রের উদ্দেশ্য। সুতরাং সেই উদ্দেশু লইয়া সম্প্রদায়ভেদে বেদাস্তের ভাষ্য ও টীকা রচিত হয়। ভাই, ভক্ত-বৈদাস্তিক বলেন ভগবান হইতে তদীয় শক্তির ভেদকল্পনাও যেমন আমাদের সামর্থ্যাতীত, অভেদ কল্পনাও তেমনি আমাদের সামর্থ্যাতীত । অথবা ভেদাভেদবাদ অবশ্যই স্বীকার্য্য। শক্তি ও শক্তিমান অভিন্ন হইলেও সেই ভেদ অচিন্ত্য, সেই অভেদও অচিস্ত্য । অর্থাৎ স্পষ্টরূপে উহার বিকল্পনা অসম্ভব – উহা চিস্তার আয় ও নহে, সেই জন্য এই ভেদাভেদ অচিস্ত্য । , গৌরাঙ্গদেব অভেদতত্ত্ব আর রাধাকৃষ্ণ ভেদতত্ত্ব ; সাধনায় গৌরাঙ্গত্ব লাভ করিয়া রাধাকৃষ্ণের অসমোদ্ধলীলা-রসমাধুৰ্য্য আস্বাদন করাই প্রেমিক ভক্তের চরমলক্ষ্য । ইহাই সুনিশ্চয় সাধ্যবিধি । তাই বৈষ্ণব সম্প্রদায়ে অচিন্ত্যভেদাভেদ মতই বেদাস্ত হইতে গ্রহণ করিয়াছেন । সুতরাং র্তাহীদের মতে সাধনায় অদ্বৈততত্ত্ব অর্থাৎ গৌরাঙ্গত্ব লাভ করিয়া ভেদতত্ত্বের অর্থাৎ রাধাকৃষ্ণের লীলা-রস মাধুৰ্য্য আস্বাদন করাই পঞ্চম পুরুষাৰ্থ। কিরূপে গৌরাঙ্গত্ব অর্থাৎ প্রেমময় স্বভাব লাভ করিয়া রাধাকৃষ্ণের লীলা রস জাস্বাদন পূর্বক পূর্ণানন্দের অধিকারী হওয়া যায়, পরের প্রবন্ধে তাহাই বর্ণিত হইয়াছে ।