পাতা:প্রেমিক গুরু.djvu/২৮০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

২৬২ প্রেমিক-গুরু পারিলে সন্ন্যাসাশ্রমে অধিকার হয় না বলিয়া শাস্ত্রে উল্লিখিত হইয়াছে। এক্ষণে এই দুই বিরুদ্ধমতের সামঞ্জস্ত এই যে, কর্তব্যবুদ্ধি প্রণোদিত না হইয়া উপস্থিত কৰ্ম্ম সকল ফলাভিসন্ধি পরিত্যাগ পূর্বক করিয়া যাওয়ার নাম নিগুৰ্ণ ত্যাগ। পদ্মপত্র যেমন জল মধ্যে থাকিয়াও জলে লিপ্ত হুয় না, তদ্রুপ যাহার কর্তব্যবুদ্ধি শূন্ত হইয়া স্ব স্ব ইন্দ্রিয় দ্বারা কৰ্ম্মসকল যথাযথ ভাবে সম্পন্ন করিয়া থাকেন, তাহার কৰ্ম্ম বা কৰ্ম্মফলে জড়িত হয়েন না । এইরূপ ত্যাগের নামই গুণাতীত ত্যাগ,-ইহাই প্রকৃত-সন্ন্যাস । এই ত্যাগ-সন্ন্যাসের মহিমা কীৰ্ত্তন করিয়া শ্ৰীকৃষ্ণ বলিয়াছেন ; – “সৰ্ব্বলোকেশ্বপি ত্যাগঃ সন্ন্যাসী মম দুল্লভঃ” । ত্যাগ-সন্ন্যাসী সকল লোকের, এমন কি আমারও দুল্লভ। কৰ্ম্ম সম্বন্ধীয় ত্যাগের ইহাই সুন্দর মীমাংসা । কৰ্ম্মত্যাগ ব্যতীত বিষয়ভোগত্যাগও সন্ন্যাসীর অবশু কৰ্ত্তব্য । কিন্তু তাহা ও গুণাতীত হওয়া প্রয়োজন । শাস্ত্রবিধি না মানিয়া কঠোর তপস্তায় দেহ নষ্ট করাকে তামসত্যাগ, সমাজে খ্যাতি-প্রতিপত্তি আশায় ফলমূলাহারে তপস্বী হওয়ার নাম রাজসত্যাগ এবং চিত্ত-শুদ্ধির জন্ত যে বিধি-বিহিত সংযম, তাহাই সাত্ত্বিক ত্যাগ। কিন্তু এই সকল ত্যাগ গুণময় বিধায় সন্ন্যাসীর অবলম্বনীয় নহে। সন্ন্যাসের ত্যাগ নিগুৰ্ণাত্মক। প্রলুব্ধ না হইয়া অনাসক্ত ভাবে ইন্দ্রিয়গ্রাহ স্ব স্ব বিষয় ভোগ করার নাম, গুণাতীত ত্যাগ । নতুবা লেংটি পরিয়া বা লেংটা হইয়া বৃক্ষতলে বসিয়া থাকার নাম ত্যাগ নহে। লেংটিতে আসক্তি আর গরদে বিরক্তি, কুটিরে আসক্তি আর কোঠায় বিরক্তি, শাকে আসক্তি আর মিষ্টান্নে বিরক্তি, কম্বলে আসক্তি আর গদিতে বিপ্লক্তি, নিগুৰ্ণ র্ত্যাগের লক্ষণ নহে। আসক্ত বা বিরক্ত ভাব পরিত্যাগ পূৰ্ব্বক স্ব স্ব ইন্দ্রিয় দ্বারা যথাযোগ্য বিষয় ভোগ করাকেই গুণাতীত ত্যাগ বলে । এইরূপ নিগুৰ্ণ ত্যাগীই প্রকৃত সন্ন্যাসী। যথা – կ