পাতা:ফুলমণি ও করুণার বিবরণ.pdf/২৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

১৯

ছিল; আমি ভাবিলাম, কর্জ্জ করা অপেক্ষা পরের সেবা করা ভাল। অতএব সেই স্থানে গিয়া ঐ কর্ম্মে নিযুক্ত হইলাম। তাহাতে আমাকে প্রতিদিন প্রাতঃকালে যাইতে হইত, কিন্তু সায়ংকালে ঘরে আসিবার অবকাশ পাইতাম। সুন্দরী সে সময়ে স্কুলে ছিল, ফলতঃ ঐ বিপদ কালে তাহাকে ঘরে আনিতে হইল, কারণ আমি কর্ম্মে গেলে তাহাকেই আপন পিতার সেবাদি করিতে হইত। বাবুর নিকটে প্রতিমাসে তিন টাকা বেতন পাইতাম, এবং দুগ্ধ বিক্রয়দ্বারা গোরুর খাদ্যাদির খরচ বাদে প্রায় প্রতিমাসে আর দুই টাকা লাভ করিতাম। এইরূপে মোটা ভাত খাইয়া মোটা কাপড় পরিয়া ছয় মাস পর্য্যন্ত দিনপাত করিলাম। সুন্দরীর পিতার পীড়া হওনের পূর্ব্বে আমরা ষোলটি টাকা জমা করিয়াছিলাম, তাহাতে পাঁচ টাকায় গোরুর ঘর বানাইলাম, আর এগার টাকা দিয়া গোরু বাছুর কিনিলাম। আমাদের এমত দুঃখ হইবে, তাহা যদি পূর্ব্বে জানিতাম, তবে বোধ হয় ঐ টাকা খরচ করিতাম না। তথাপি এক প্রকার ভাল হইয়াছে, কারণ সেই অবধি আমি সর্ব্বদা দুগ্ধ বিক্রয় করিয়া কিছু লাভ করিয়া আসিতেছি।