পাতা:বংশ-পরিচয় (অষ্টম খণ্ড) - জ্ঞানেন্দ্রনাথ কুমার.pdf/১৭২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

S80 বংশ-পরিচয় । যোগ ইংরাজী, হিন্দী প্রভৃতি নানাভাষায় অনুবাদিত হইয়াছে। রোগশয্যায় বসিয়া অশ্বিনীকুমার “কৰ্ম্মযোগ” লেখেন। যদি তিনি সুস্থ থাকিতেন, তাহা হইলে “কৰ্ম্মযোগ’ যে সুবৃহৎ গ্রন্থ হইত। তাহাতে কিছুমাত্ৰ সন্দেহ নাই। “কৰ্ম্মযোগে” অশ্বিনীকুমার ইহাই প্ৰতিপন্ন করিয়াছেন যে, জীবমাত্রকেই কৰ্ম্ম করিতে হয়, কাহারও কৰ্ম্ম না করিয়া একদণ্ড চুপ করিয়া থাকিবার উপায় নাই। তবে সে কৰ্ম্ম নিষ্কাম হওয়া চাই। বাঙ্গালা ১৩০০ অব্দে বরিশাল ব্ৰজমোহন বিদ্যালয়ের বান্ধব সমিতিতে অশ্বিনীকুমার ‘প্ৰেম” সম্বন্ধে তিনটি বক্ততা করেন। এই তিনটি বক্ততা পুস্তকাকারে ‘প্ৰেম” নামে প্ৰকাশিত হইষাছে। ‘প্রেম’ পুস্তকেও তিনি ভগবৎপ্রেমই যে জগতের সার বস্তু এই তত্ত্বই নিরূপণ করিয়াছেন । প্ৰেমলাভ করিতে গেলে ভগবানে গতি থাকা দরকার । স্বার্থবিহীন না হইলে কখনও প্ৰেমলাভ করা যায় না। প্ৰেমলাভ করিতে গেলে স্বার্থবিহীন হইতে হয়। যিনি প্ৰেমিক, তিনি প্ৰেমাস্পদের নিকট হইতে প্রেমের প্রতিদান চাহেন না, তিনি ভালবাসিয়াই সুখী হন। র্তাহার অপর একখানি পুস্তকের নাম ‘দুর্গোৎসব তত্ত্ব’। এই পুস্তকে তিনি মায়ের সর্বব্যাপিত্ব নির্দেশ করিয়াছেন। আদ্যাশক্তি মা-শুধু ব্ৰাহ্মণের বাড়ীতে থাকেন না, চামারের বাড়ীতেও তিনি সমভাবেই অধিষ্ঠিত হন, এই সত্যটুকুই তিনি ‘দুর্গোৎসবতত্ত্বে’ লিপিবদ্ধ कब्रिभांछिलन । অশ্বিনীকুমার সংসারী ছিলেন ; জমিদারী, মহাজনী প্রভৃতি বৈষয়িক ও সাংসারিক অনেক বিষয় তঁহাকে ভাবিতে হইত। কিন্তু এ সমস্ত ভাবনার মধ্যেও তিনি তঁহার প্রাণকে দেশের দিকে রাখিয়াছিলেন । তিনি একদিকে যেমন মামলা-মোকদ্দমার নথিপত্ৰ দেখিতেন, অন্যদিকে তেমনি ধৰ্ম্মগ্রন্থপাঠে ও ধৰ্ম্মালোচনায় কখনও আলস্যা করিতেন না।