পাতা:বংশ-পরিচয় (অষ্টম খণ্ড) - জ্ঞানেন্দ্রনাথ কুমার.pdf/২৫০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

R SV9 বংশ-পরিচয় । শিশু পুত্রের কথা শুনিয়া গৃহাশুদ্ধ লোক একেবারে হাসিয়া অস্থির হইতেন। জগদীশচন্দ্ৰ পাঠ্যাবস্থায় উপনীত হইলে পিতা তাহাকে উচ্চ ইংরাজী স্কুলে ভৰ্ত্তি না করিয়া দিয়া পাঠশালায় ভৰ্ত্তি করিয়াছিলেন। তাহার দৃঢ় ধারণা ছিল, পাঠশালার শিক্ষাই বাল্য জীবনের প্রাথমিক শিক্ষা হওয়া উচিত। পাঠশালায় যে মানসাস্ক, গণিত, ধারাপাত শিক্ষা দেওয়া হয়, তাহা কলেজে গিয়া বড় বড় জ্যামিতি, বীজগণিত শিখিলেও শিক্ষা করা যায় না। আর একটা সুবিধা এই যে, পাঠশালায় পড়িলে নানা শ্রেণীর ছেলেদের সহিত মিশিবার সুযোগ পাওয়া যায়। পাঠশালায় দীন দরিদ্র কুটীরবাসীর পুত্রের অধ্যয়ন করে, ধনীর সন্তানেরা যদি ইহাদের সহিত না মিশিবে, তবে তাহারা সভ্য ও উন্নত হইবে কিরূপে ? ভগবানচন্দ্র এই শ্রেণীর উচ্চান্তঃকরণের লোক ছিলেন। যাহাতে “অস্পৃশ্য।” বালকদের সহিত একত্ৰ বসিয়া ও পড়া-শুনা করিয়া জগদীশচন্দ্রের মন হইতে “আমি বড়” “অমুক বড়” এই ভাবটি চলিয়া যায় এই জন্যই তিনি পুত্রকে পাঠশালায় পাঠাইয়াছিলেন। ভগবানচন্দ্ৰ এক শিল্প-বিদ্যালয় প্ৰতিষ্ঠা করিয়াছিলেন, সেই বিদ্যালয়ের ছাত্ৰগণকে নানা প্ৰকার শিল্পবিষয়ক কারুকাৰ্য্য চিন্তা করিয়া উদ্ভাবন করিতে হইত। জগদীশচন্দ্রেরও সেই শিল্প-বিদ্যালয়ে ভাবী জীবনের আবিষ্কারের প্রথম সুচনা হইয়াছিল ইংরাজীতে qrs ftit gisel vattig, Child is the father of man অর্থাৎ শিশুই মানবের ভাবী। পিতা । বস্তুতঃ শিশুর শৈশবকালীন কাৰ্য্যপ্ৰণালী দেখিয়া তাহার ভাবী জীবনের আভাস পাওয়া যায়। যাহা শৈশব জীবনে অঙ্কুরিত অবস্থায় থাকে, তাহাই তাহার ভাবী জীবনে মহীরুহের ন্যায় বহুশাখ হইরা চতুর্দিকে বিস্তৃত হয়। শৈশবের পেনসিল-চাের পরিণত বয়সে ঘোর তস্করে পরিণত হয়। জগদীশচন্দ্র পাঠশালার ছুটি হইলে অন্ত্যজ বালকদের সহিত গৃহে ফিরিয়া আসিতেন,