জগন্নাথ তর্কপঞ্চানন । হুগলী জেলার ত্ৰিবেণী গ্রামে রুদ্রদেব তর্কবাগীশ নামে এক অসাধারণ পণ্ডিত বাস করিতেন । তাহার ঔরসে জগন্নাথ তর্কপঞ্চানন মহাশয় জন্মগ্রহণ করেন । তিনি তাহার পিতার দ্বিতীয় পক্ষের স্ত্রীর গর্ভজাত । রুদ্রদেবের প্রথম পক্ষের স্ত্রী ও সন্তানাদি কালগ্ৰাসে পতিত হওয়ায় তিনি গ্রামবাসিগণের অনুরোধে পুনরায় বিবাহ করেন এবং সেই পত্নীর গর্ভে জগন্নাথের জন্ম হয়। বিবাহের পর রুদ্রদেব কাশীধামে গিয়া পুত্রলাভের আশায় কঠোর সাধনা ও বিশ্বেশ্বরের চরণে প্রার্থনা করিয়াছিলেন । এদিকে জগন্নাথের মাতামহীও পুরুষোত্তমে গিয়া জগন্নাথদেবের নিকট পুরশ্চরণাদি পূর্বক প্রার্থনা করিয়াছিলেন যেন তিনি শীঘ্ৰ দৌহিত্রমুখ দর্শন করিতে পারেন। কথিত আছে, জগন্নাথদেবের অনুগ্ৰহে পুত্ৰলাভ করেন বলিয়া তাহার নাম জগন্নাথ রাখা হয়। জগন্নাথ শৈশবে এতদূর চঞ্চল ও উদ্ধতপ্রকৃতি ছিলেন যে, প্রতিবাসিগণ র্তাহার দৌরাত্ম্যে অতিষ্ঠ হইয়া উঠিয়াছিলেন। জগন্নাথ-জননী সুশীলা প্ৰতিবেশিনীদের নিকট গিয়া দুরন্ত পুত্রের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করিতেন । ৭৮ বৎসর বয়স হইলে জগন্নাথ পিতার নিকট ব্যাকরণশাস্ত্ৰ পড়িতে থাকেন, কিন্তু তথাচ দুরন্তপন কিছুমাত্র কমে না। এই সময়ে জগন্নাথের মাতৃবিয়োগ হয় এবং জগন্নাথ তাহার মাসীমাতার স্নেহে ও আদরে প্রতিপালিত হইতে থাকেন। রুদ্রদেব তর্কবাগীশের জ্যেষ্ঠ ভ্রাতা ভবদেব ন্যায়ালঙ্কার তত্ৰতা জমিদারের আগ্ৰহাতিশয্যে বংশবাটীতে থাকিয়া অধ্যাপনা করিতেন। তিনি জগন্নাথকে নিজের চতুষ্পাঠীতে লইয়া যান। প্রতিদিন প্ৰত্যুষে জগন্নাথ বংশবাটীতে গমন করিয়া ভবদেবের নিকট অধ্যয়ন করিতেন এবং মধ্যাহ্ন-ক্রিয়া তথায় সমাপন করিয়া সন্ধ্যাকালে ত্ৰিবেণীতে
পাতা:বংশ-পরিচয় (অষ্টম খণ্ড) - জ্ঞানেন্দ্রনাথ কুমার.pdf/২৬২
অবয়ব