পাতা:বংশ-পরিচয় (অষ্টম খণ্ড) - জ্ঞানেন্দ্রনাথ কুমার.pdf/২৬৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

জগন্নাথ তর্কপঞ্চানন । &\\ সম্পন্ন রাজা, কোন ব্যক্তিকে জাতিচু্যত কিংবা সমাজচ্যুত করিবার অধিকার কেবল তঁহারই ছিল। এই ভাবে তিনি অনেকের জাতিপাত করিয়াও অনেক টাকা উপাৰ্জন করিতেন। সেই সময়ে ত্ৰিবেণীর নিকট বিশপাড়া গ্রামে এক নির্ধন ব্ৰাহ্মণ কোন এক অপবাদের জন্য সমাজচ্যুত হইয়। রাজা কৃষ্ণচন্দ্রের শরণাপন্ন হয়। রাজা কৃষ্ণচন্দ্ৰ সেই দরিদ্র ব্ৰাহ্মণের নিকট টাকা পাইলেন না বলিয়া র্তাহার প্রার্থনাতে কৰ্ণপাতও করিলেন না। এই ঘটনা জগন্নাথের কর্ণগোচর হইবামাত্র তিনি ব্ৰাহ্মণকে যথেষ্ট আশ্বাস দিয়া বলিলেন, কোনও অপবাদে সমাজচ্যুত হইলে পণ্ডিতের ব্যবস্থা গ্ৰহণ করিয়া প্ৰায়শ্চিত্ত করিলে সে অপবাদের প্রতীকার হয়। ব্ৰাহ্মণ বলিলেন, আপনি যদি রাজা কৃষ্ণচন্দ্রের বিরুদ্ধে দাড়ান, তাহা হইলে আপনার সমূহ বিপদ হইবে। কিন্তু জগন্নাথ সে কথায় আদৌ কর্ণপাত করিলেন না । তর্কপঞ্চানন মহাশয় নিজে ব্যবস্থা দিয়া সেই ব্ৰাহ্মণকে সমাজে উঠাইলেন। রাজা কৃষ্ণচন্দ্র এই সংবাদে জগন্নাথের প্রতি এতদূর কোপান্বিত হইলেন যে, তিনি কি উপায়ে তাহাকে পরাভূত করিবেন। ইহাই ভাবিতে লাগিলেন। রাজা কৃষ্ণচন্দ্র একটি ‘রাজপেয় যজ্ঞ’ আরম্ভ করিলেন। তাহাতে কাশী, মিথিলা, দ্রাবিড়, কান্যকুব্জ, তৈলিঙ্গ প্ৰভৃতি নানা দেশের পণ্ডিতেরা আমন্ত্রিত হইলেন, কেবল হইলেন না-জগন্নাথ তর্কপঞ্চানন । জগন্নাথ দেখিলেন, এই মহতী সভায় যদি তিনি উপস্থিত না হন, তাহা হইলে বিদেশীয় পণ্ডিতগণ মনে করিবেন যে, জগন্নাথ বিচার বিতর্কের ভয়ে সভায় আসেন নাই। জগন্নাথ বিনা নিমন্ত্রণে রাজসভাতে উপস্থিত হইলেন, রাজা কৃষ্ণচন্দ্ৰ অগত্যা লজ্জিতভাবে তঁহাকে অভ্যর্থনা করিলেন। জগন্নাথের সহিত বিচারে সমগ্ৰ পণ্ডিতমণ্ডলী পরাজিত হইলেন, জয়-জয় নাদে সভাস্থল মুখরিত হইল । রাজা কৃষ্ণচন্দ্ৰ তাহাকে তথায় থাকিয়া আহারাদি করিবার অনুরোধ