পাতা:বংশ-পরিচয় (অষ্টম খণ্ড) - জ্ঞানেন্দ্রনাথ কুমার.pdf/২৬৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

RVOS বংশ-পরিচয় । করিলেন, কিন্তু জগন্নাথ তাহা না করিয়া স্থানান্তরে থাকিয়া নিজব্যয়ে আহারাদি করিতে লাগিলেন। যজ্ঞ সমাপ্ত হইলে জগন্নাথ নৌকাযোগে মুর্শিদাবাদে গিয়া রাজা নন্দকুমারের নিকট রাজা কৃষ্ণচন্দ্র-কৃত অপমানের কথা বলিলেন। রায় রায়া সেই সংবাদে অত্যন্ত কুপিত হইয়া একদিনের মধ্যে বাকী রাজস্বের হিসাব-নিকাশ দেখাইবার জন্য কানুনগোর প্রতি আদেশ করিলেন। রাজা কৃষ্ণচন্দ্ৰ নবাব-সমীপে উপস্থিত হইলেন। নবাব রাজা কৃষ্ণচন্দ্রের পরিচয় পাইয়া আদেশ করিলেন যে, নদীয়ার জমিদার বড় দুষ্ট লোক, খাজানা দেয় না, উহাকে কারাগারে নিক্ষেপ কর, এক সপ্তাহ মধ্যে সমুদয় রাজস্ব উপস্থিত না করিলে “সুন্নৎ” অৰ্থাৎ ত্বকচ্ছেদ করিয়া “কলম” পড়াইয়া উহাকে মুসলমান করিয়া লণ্ডয়া হইবে। রাজাকে তৎক্ষণাৎ কারারুদ্ধ করা হইল, রাজা মহাচিন্তায় পতিত হইলেন। বহু চেষ্টা করিয়াও রাজা বার লক্ষ টাকা ঋণ করিতে পারিলেন না। সাতদিন পূর্ণ হইবার একদিন পূর্বে রাজা কৃষ্ণচন্দ্ৰ গলদেশে সোণার কুঠার বঁাধিয়া কারা-রক্ষীকে সঙ্গে লইয়া রাত্ৰিতে মুর্শিদাবাদে যে বাসায় জগন্নাথ তর্কপঞ্চানন অবস্থান করিতেছিলেন, সেই বাসায় উপস্থিত হইলেন। রাজাকে তদাবস্থ দেখিয়া জগন্নাথ তাহাকে সাদরে অভ্যর্থনা করিলেন । জগন্নাথের নিকট কঁাদিয়া কঁাদিয়া রাজা জাতি ভিক্ষা চাহিলেন এবং তঁহাকে মুক্ত করিয়া দিলে জগন্নাথকে প্রচুর অর্থ ও সম্পত্তি প্ৰদান করিবেন বলিয়া প্ৰলোভন দেখাইলেন । কিন্তু জগন্নাথ বলিলেন, “টাকার প্রলোভন আমি করি না। আপনার যদি কোন উপকার করিতে পারি, আমি সেই চেষ্টাই করিব। কাল আমি আপনার সহিত সাক্ষাৎ করিব।” , রাজা কৃষ্ণচন্দ্ৰ জগন্নাথ তর্কপঞ্চাননের কথায় বিশেষ আশ্বস্ত হইয়া কারাগারে ফিরিয়া আসিলেন। এদিকে জগন্নাথ নন্দকুমারের নিকট গিয়া বলিলেন, “রাজা কৃষ্ণচন্দ্ৰকে আর শান্তি দিধার প্রয়োজন নাই, যথেষ্ট হইয়াছে।” নন্দকুমার নবাবকে