পাতা:বংশ-পরিচয় (অষ্টম খণ্ড) - জ্ঞানেন্দ্রনাথ কুমার.pdf/৪৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

স্বামী ব্ৰহ্মানন্দ ঠাকুর শ্ৰীশ্ৰীরামকৃষ্ণ পরমহংসদেবের প্রধান প্ৰধান শিষ্যগণের মধ্যে স্বামী ব্ৰহ্মানন্দ অন্যতম। বাঙ্গালা ১২৬৮ সালে (ইংরাজী ১৮৬২ খ্ৰীঃ) তিনি ২৪ পরগণার অন্তৰ্গত বসিরহাটের নিকটবৰ্ত্তী সিকরা কুলীন গ্রামের প্রসিদ্ধ ঘোষ-বংশে জন্মগ্রহণ করেন। সংসারাশ্রমে তাহার নাম ছিল রাখালচন্দ্ৰ ঘোষ। তাহার পিতার নাম ৬/আনন্দমোহন ঘোষ। ব্ৰহ্মানন্দের পিতা, পিতামহ প্ৰভৃতি সকলেই তাৎকালিক বঙ্গসমাজে বিশেষ বিখ্যাত লোক ছিলেন। ব্ৰহ্মানন্দ তাহার পিতার প্ৰথমা পক্ষের স্ত্রীর একমাত্ৰ সন্তান ছিলেন। তঁহার পিতা একজন জমিদার ছিলেন ; কিন্তু আভিজাত্যের অহমিকা কখনও তাহার ছায়া স্পর্শ করিতে পারে নাই। তিনি ধনী হইলেও অমায়িক, প্ৰকৃতিরঞ্জন, দেবদ্বিজে শ্রদ্ধাবান এবং স্বধৰ্ম্মপরায়ণ ছিলেন। ব্ৰহ্মানন্দের বয়স যখন মাত্র ৫ বৎসর তখন তাহার মাতৃবিয়োগ হয়। তাহার মাতার মৃত্যুর পর তাহার পিতা পুনরায় বিবাহ করেন ; কিন্তু র্তাহার বিমাতা এরূপ সতীলক্ষ্মী মহিলা ছিলেন যে, মাতৃহারা ব্ৰহ্মানন্দকে আপন পুত্রের ন্যায় স্নেহ করিতেন, তাহার স্নেহে ব্ৰহ্মানন্দ একদিনের জন্যও বুঝিতে পারেন নাই যে, তিনি মাতৃহারা। গ্ৰাম্য স্কুলে পড়া শেষ করিয়া ব্ৰহ্মানন্দ কলিকাতায় আসিয়া কলিকাতা ট্রেনিং একাডেমী নামক উচ্চ ইংরাজী বিদ্যালয়ে অধ্যয়ন করেন, উক্ত বিদ্যালয়ে অধ্যয়নই তাহার শেষ ইংরাজী শিক্ষা । তাহার বয়স যখন উনবিংশতি বৎসর, তখন কোন্নগরের ডাক্তার ভুবনমোহন মিত্রের কন্যার সহিত র্তাহার বিবাহ দেওয়া হয়। এই সময়ে একদিন ব্ৰহ্মানন্দ শ্বাশুড়ী, শালাজ প্রভৃতির সঙ্গে দক্ষিণেশ্বরে ঠাকুর রামকৃষ্ণ-সন্দর্শনে যান এবং ঠাকুরকে দেখিয়া তিনি প্ৰাণের মধ্যে একটি অনুপ্রেরণা লাভ করেন।