পাতা:বংশ-পরিচয় (চতুর্থ খণ্ড) - জ্ঞানেন্দ্রনাথ কুমার.pdf/২৮৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৬ চন্দ্রমোহন চট্টোপাধ্যায়। I o) বিশেষ উল্লেখ করিয়া তাহার জন্য স্বতন্ত্র স্বাস্থ্যপানের প্রস্তাব করিয়া সকলকে বিস্মিত ও কৌতুহলী করিয়া তুলিলেন। প্ৰস্তাবক ও তাঁহার প্ৰস্তাবের হেতু নির্দেশার্থে বলিলেন যে তিনি ভারতবর্ষে সিভিলিয়ানের কাৰ্য্য করিয়া তথায় পেন্সন ভোগ করিতেছিলেন। ভারতবর্ষে অবস্থান কালে একবার তিনি বিশেষ পীড়িত হইয়া পড়েন, কিন্তু জিলার ডাক্তার সাহেবের সহিত মনোমালিন্য থাকায় ছুটীর জন্য ডাক্তারের সাটিফিকেট কিছুতেই পান নাই। অসুস্থতা বৃদ্ধি হওয়ায়, ছুটির বন্দোবস্ত করিবার জন্য কলিকাতায় নৌকা করিয়া আসিয়া গঙ্গাবক্ষে অবস্থিতি করেন। তিনি মনস্থ করিয়াছিলেন যে কলিকাতার কোন পদস্থ ব্যক্তির সহিত আলাপ করিয়া তাহার সাহায্যে দ্বারকানাথ ঠাকুরের নিকট নিজের অবস্থা জানাইয়া ঠাঙ্গার সহায়তায় যাহাতে ছুটী পান, তাহার চেষ্টা করিবেন। ইতিমধ্যে র্তাহার পুরাতন বেহার নৌকা হইতে নামিয়া যায় এবং ঘটনাক্রমে গঙ্গাতীরে চন্দ্রমোহনকে বেড়াইতে দেখিয়া তাহার নিকট নিজ প্রভুর অবস্থা বর্ণনা করে। চন্দ্রমোহন বেহারিার কথা শুনিয়া বৃদ্ধিকে দেখিতে নৌকায় যান। তিনি ব্যাপার স্বচক্ষে দেখিয়া তৎক্ষণাৎ তদানীন্তন গভর্ণর জেনারেল লর্ড মেটুকাফের সহিত দেখা করিয়া সমস্ত অবস্থা জানান এবং লাট সাহেবের ডাক্তার ও প্ৰাইভেট সেক্রেটারীকে সঙ্গে লইয়া পুনরায় নীেকায় আসেন ও তখন ছুটীর দরখাস্ত লেখাইয়া বৃদ্ধের স্বাক্ষর ও ডাক্তারের সার্টফিকেট সহ পেসা করিয়া লাট সাহেবের দ্বারায় ছুটী মঞ্জুর করাইয়া লন ও সেইদিন নৌকায় ফিরিয়া আসিয়া ছুটীর মঞ্জুরী খানি বৃদ্ধের হাতে দেন। এইরূপে চন্দ্ৰমোহন বিশেষ চেষ্টা না করিলে বৃদ্ধকে সেবারে ভারতবর্ষেই অকালে ইহলীলা মুম্বরণ করিতে হইত এবং তাহার পরিবারবর্গের দুর্দশার অবধি থাকিস্ত না । এই ঘটনার বিবরণ শুনিয়া উপস্থিত সকলেই চন্দ্রমোহনকে বিশেষ সাধুবাদ দিয়া উৎসাহের সহিত র্তাহার স্বাস্থ্য উদ্দেশ্যে পান করেন।