পাতা:বংশ-পরিচয় (ষষ্ঠ খণ্ড) - জ্ঞানেন্দ্রনাথ কুমার.pdf/৩১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

তালন্দ মৈত্র জমিদার-বংশ । 9ܓ ছিলেন ; পরে ১২৯০ সালের পূৰ্বে ঐ পাঠশালাকে মধ্য ইংরাজী স্কুলে পরিণত করিয়া স্বীয় নামানুসারে “আনন্দমোহন ইনষ্টিটিউসন’ নাম রাখিয়া গিয়াছেন। তৎকালে পাশ্ববত্তীর্ণ অন্য কোন স্থানে কোন স্কুল ছিল না , সুতরাং ঐ অঞ্চলের লোকের শিক্ষার বিশেষ সুবিধা হইয়াছিল। বিদেশী ছাত্রদের গাকিবার জন্য একটী বোর্ডিং ও স্থাপন করিয়াছিলেন । তথায় বহু বিদেশী ছাত্ৰ থাকিয়া উক্ত স্কুলে বিদ্যাশিক্ষা করিয়াছে। এই বোর্ডিং এর সমস্ত ব্যয়, এমন কি ছাত্রদের বৈকালের জলখাবারের ব্যয় পৰ্য্যন্ত তিনি নিজে বহন করিতেন। স্কুল এবং বোর্ডিং এখনও সেইভাবেই চলিতেছে । দানে তিনি মুক্তহস্ত ছিলেন। কেহ বিপদে পড়িয়া তাহার নিকট উপস্থিত চাইলে তিনি তাহাকে যথেষ্ট সাহায্য করিয়া বিপদ হইতে উদ্ধার করিয়া দিতেন । ইনি পরম বৈষ্ণব ছিলেন। শ্ৰীশ্ৰীবৃন্দাবনধামে পৈতৃক বিগ্ৰহ ৬। শ্ৰীশ্ৰীরাধামাধব জিউ ঠাকুরকে স্থাপন করিয়া সেবা চালাইবার নিয়মিত ব্যবস্থা করিয়া গিয়াছেন । এই শ্ৰীমন্দির তথায় “মৈত্ৰকুঞ্জ” নামে খ্যাত । এখানে বার্ষিক ছয় হাজার টাকার উপর ব্যয় হইয়া থাকে । আগ্রা জেলাতেও তাস্কার স্থাবর সম্পত্তি আছে। তালন্দের বাড়ীতে শ্ৰীশ্ৰী৬/মদনমোহন জিউ বিগ্ৰহ তাহার দ্বারাই প্ৰতিষ্ঠিত। এই বিগ্ৰহদেবের শ্ৰীপাদপীঠের নীচে, “রূপনারায়ণ শৰ্ম্মা” নাম খোদিত আছে। মালদহ জেলার অধীন তাহার জমিদারীর অন্তৰ্গত চাপাই গ্রাম হইতে এই বিগ্ৰহদেবকে আনন্দমোহন মৈত্ৰ মহাশয় তালন্দ গ্রামে আনয়ন করিয়া স্থাপন করিয়াছিলেন । ‘রূপনারায়ণ শৰ্ম্মা” নাম খোদিত দেখিয়া অনুমান হয় “প্ৰসিদ্ধ গৌরগতপ্রাণ রূপ গােস্বামী৷” এই বিগ্ৰহস্থাপনকৰ্ত্তা। সম্ভবতঃ গৌড়ে তিনি নবাব বাহাদুরের কৰ্ম্ম করিবার সময় এই বিগ্ৰহ স্থাপন করিয়া থাকিবেন । আনন্দমোহন অত্যন্ত অতিথিপ্রিয় ছিলেন । যত অতিথিই আসুক না। কেন, যে সময়েই আসুক না কেন, তিনি অকাতরে অন্ন দান করিতেন।