বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:বংশ-পরিচয় (ষষ্ঠ খণ্ড) - জ্ঞানেন্দ্রনাথ কুমার.pdf/৪০৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

স্বৰ্গীয় মোহিনীমোহন চক্ৰবৰ্ত্তী V8 ) এই সামান্য কাৰ্য্যে অত্যন্নকাল-মধ্যেই যে অনন্যসাধারণ প্ৰতিভা ও কৰ্ম্মকুশলতার পরিচয় দিলেন, তাহাতেই তঁহার উপরিতন কৰ্ম্মচারী কুষ্টিয়ার তৎকালীন সাবডিভিশনাল ম্যাজিষ্ট্রেট ও পরবর্তী কালে বঙ্গের লেপ্টেনাণ্ট গভর্ণর স্তর আলেকজাণ্ডার ম্যাকেজি এবং স্তর ডব্লিউ, হাণ্টার মোহিনীমোহনের চরিত্র, জ্ঞান ও কৰ্ম্মকুশলতায় মুগ্ধ হইয়া, বদলির সময়ে তাহাকে সঙ্গে লইয়া ইণ্ডিয়ান মিউজিয়মে এবং পরে বেঙ্গল সেক্রেটেরিয়েটে উপযুক্ত ও সম্মানিত পদ প্ৰদান করেন। পরে মোহিনীমোহন তঁহাদেরই পরামর্শ ও উৎসাহে ডেপুটী ম্যাজিষ্ট্রেট পরীক্ষার জন্য প্ৰস্তুত হয়েন এবং ঐ পরীক্ষায় সসম্মানে উত্তীর্ণ হইয়া বিচারাসন অলঙ্কত করেন । মোহিনীমোহনের ঘটনাবহুল কৰ্ম্মজীবনে তঁহার অসাধারণ নিপুণতা, নিৰ্ভীকচিত্ততা ও ন্যায়পরায়ণতার যথেষ্ট পরিচয় পাওয়া গিয়াছে। নিম্নোক্ত ঘটনাটি তাহার একটি উজ্জল দৃষ্টান্ত । মোহিনীমোহন যখন নোয়াখালিতে ডেপুটী ম্যাজিষ্ট্রেট ছিলেন, তখন সরকারী তহবিল আত্মসাৎ করার অপরাধে তন্ত্ৰত্য দেওয়ানী আদালতের জনৈক কৰ্ম্মচারী এবং কালেক্টরীর সেরেস্তাদার অভিযুক্ত হয়েন । বিচারভার মোহিনীমোহনের উপর অপিত হয় এবং কালেক্টর সাহেব আসামীদ্বয়কে শাস্তি দিবার জন্য মোহিনীমোহনকে পুনঃ পুনঃ অনুরোধ করেন। কিন্তু স্বাধীনচেতা, ন্যায়পরায়ণ মোহিনীমোহন কালেক্টর সাহেবের বিরাগভয়ে কিঞ্চিম্মাত্ৰও ভীত হইলেন না। আসামীদ্বয়ের বিরুদ্ধে যে প্ৰেমাণ উপস্থিত হইল তাহাতে তিনি সন্তুষ্ট না হইয়া দৃঢ়চিত্তে ন্যায়বিচার করিয়া আসামীদ্বয়কে মুক্ত করিয়া দিলেন। এই ঘটনায় যদিও কালেক্টর সাহেবের রোষাবাহিতে পড়িয়া মোহিনীমোহনকে কিছুকাল বেশ বেগ পাইতে হইয়াছিল, তথাপি ধৰ্ম্মপরায়ণ, ন্যায়নিষ্ঠ, নিৰ্ভীক মোহিনীমোহন তাহাতে কিছুমাত্ৰ কাতর ও অবনমিত হয়েন নাই ।