হাতেই প্লেট, আহারের পূর্বে চাখিয়া দেখিতেছে, মাংসটা কেমন হইয়াছে। এমন সময় গোবিন্দ আসিয়া হাজির হইল।
দক্ষিণাদার সম্মুখে উপস্থিত হইয়া নিবেদন করিল, “আমাকে নাকি ছাড়িয়ে দেবেন?”
দক্ষিণাদা চটিয়া গিয়া বলিলেন, “দেবই তো।”
গোবিন্দ বলিল, “না, আমি নিজেই রিজাইন করব।”
শুনিয়া বাবুর প্রায় বিহ্বল হইয়া গেলেন। বলে কি, গোবিন্দ নাকি রিজাইন করিবে। ব্যাটা ইংরেজীও জানে দেখা যাইতেছে।
গোবিন্দ কহিল, “ডিসমিস করলে নাম খারাপ হয়, তাই আমি রিজাইন করব ঠিক করেছি।”
গোবিন্দকে অবশ্য ডিসমিস করা হয় নাই কিংবা, সে-ও রিজাইন করিবার সুযোগ পায় নাই। বাড়ি হইতে মায়ের অসুখের খবর পাইয় সে ছুটি লইয়া চলিয়া যায়, আর ফিরিয়া আসে নাই।
পৃথিবীকে জলে আর স্থলে ভাগাভাগি করিয়া লইয়াছি। শুনিতে পাই যে, ইহার মধ্যে নাকি তিনভাগই পড়িয়াছে জলের দখলে, আর বাকী একভাগ পড়িয়াছে স্থলের অংশে। ইহা যদি সত্য হয়, তবে বুঝিতে হবে যে, এই বিষম ভাগের নিশ্চয় একটা যুক্তিযুক্ত হেতু রহিয়াছে। হেত্বটা বোধ হয় এই যে, সাত সমুদ্রের লোনাজলে যদি পৃথিবীকে বেষ্টন করিয়া না রাখা হইত, তবে গোটা পৃথিবীটাই পচিয়া উঠিত।
একভাগকে বাঁচাইবার জন্য তিনভাগের এই ব্যয়টাকে অপব্যয় মনে করিলে ভুল হইবে। এই অপব্যয়ের মধ্যে সৃষ্টির রহস্য বা সত্যটিই নিহিত আছে। অর্থাৎ প্রয়োজনের চেয়ে সৃষ্টিতে অপ্রয়োজনই পরিমাণে ও মূলে অধিক। অথবা, অর্থহীন একটা অপ্রয়োজন সৃষ্টিকে কোলে করিয়া বসিয়া আছে, যেমন মহাশূন্যের সীমাহীন কোলে কয়েক কোটি সৌরজগৎ এখানে-সেখানে ছিঁটেফোঁটার মত ফুটিয়া আছে—আছে কিনা, তাহাও মালুম হয়
১২৪