পাতা:বক্সা ক্যাম্প.djvu/১৫৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

ভয়, আতঙ্ক হ্রাস জেলের সর্বত্র বিস্তারিত হইয়াছিল, নিজ নিজ অভিজ্ঞতা মত তাহার বর্ণনা করিয়াছিলেন।


 পনর বেত মারার পর হেড-মাস্টারকে তিনঠ্যাংয়ের বেতমারার ত্রিভুজ হইতে মুক্ত করিয়া নামানো হইল। দেহটা ডাক্তারের জিম্মা করিয়া দেওয়া হইল।

 পৈশাচিক তৃপ্তি ও দানবীয় দৃঢ়তা লইয়া হগ সাহেব অতঃপর পঞ্চাননবাবুর দিকে ফিরিয়া দাঁড়াইলেন।

 কহিলেন, “সেলাম দেবে?”

 পঞ্চাননবাবু জিজ্ঞাসা করিলেন, “তুমি কে যে আমার সেলাম চাও?”

 উত্তর হইল, “আমি ডিস্ট্রীক্ট ম্যাজিস্ট্রেট।”

 পঞ্চাননবাবু বলিলেন, “তুমি তো একটা ক্ষুদ্র ম্যাজিস্ট্রেট! তোমার সমস্ত ব্রিটিশজাতিকে নিয়ে এস।”

 হগ সাহেব কাঠের খাঁচাটার দিকে হাতের ছড়িটা দিয়া ইঙ্গিত করিয়া বলিলেন, “দেখেছ?”

 পঞ্চাননবাবু হগ সাহেবের মুখের উপর সোজা দৃষ্টি রাখিয়া বলিলেন,—“বেত? বেতের কথা কি বলছ। তোমার বেয়নেট ও বুলেট নিয়ে এসে প্রশ্ন কর, তারপর দেখ সেলাম পাও কিনা।”

 সাহেব হুকুম দিলেন, “অলরাইট টাঙ্গাও।”

 দীর্ঘ বেত সপাং সপাং শব্দে পঞ্চাননবাবুর উপর পড়িতে লাগিল, সাহেব গণিয়া চলিলেন, এক, দো, তিন···। চৌদ্দকে ভুল করিয়া সাহেব পনর গণিলেন। একটি শব্দও পঞ্চাননবাবুর মুখ হইতে নির্গত হয় নাই, সংখ্যা গণনায় ভুল বোধ হয় এই কারণেই হইয়া থাকিবে।

 দুই হাতের, দুই পায়ের ও কোমরের বন্ধনী খুলিয়া লইতে রক্তাক্ত দেহে

১৪৬