পাতা:বক্সা ক্যাম্প.djvu/১৬৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

ভঙ্গীতে মনে হইল যে, কেহ যেন তাঁহার ত্রিসীমার মধ্যে না আসে, অন্তত যার প্রাণের মায়া আছে, সে যেন না আসে, এমনই ‘এস্পার কি ওস্পার-মার্কা বিজ্ঞাপন রবিবাবুর চোখে-মুখে লটকানো হইয়াছে। আজ রবিবাবুরই শেষ দিন, নয় বলেরই শেষ দিন, কিংবা কোন হতভাগ্য খেলোয়াড়েরই শেষ দিন। ভয়ানক ও রোমাঞ্চকর নাটকের পর্দা-উত্তোলনের অপেক্ষায় সকলে কুম্ভক মারিয়া রহিলেন।

 রবিবাবুর পুরোভাগে ব্যাকে স্থান লইলেন সন্তোষদা ওরফে ক্ষিতীশদার গোষ্ঠ দত্ত। তাঁহারও ভাবখানা কহতব্য নহে। রবিবাবু ও সন্তোষ দত্ত যেন দুই দৈত্য তিন-নম্বর টীমের ব্যুহদ্বার আগলাইয়া আছেন।

 আর ঠিক তাঁহাদের পশ্চাতে গোলপোস্টের পিছনে স্থান গ্রহন করিলেন আমাদের চ্যাম্পিয়ন ওরফে সন্তোষ দত্তের বিভীষণ ক্ষিতীশদা। তাঁহার ভুঁড়িপেট ও “তুম কৌন হ্যায়রে”-মার্কা গোঁফজোড়া অবশ্য সঙ্গেই ছিল, তাঁহার ভাবখানাও কহতব্য নহে, যেন মহাবীর ভীমসেন বালখিল্যদের ক্রীড়া দেখিতে উপস্থিত হইয়াছেন, এমনই একটি কৌতুক ও তাচ্ছিল্যের মাংসপিণ্ডের ন্যায় তিনি দণ্ডায়মান রহিলেন।

 খেলা আরম্ভ হইল। এদিকে ব্যুহরক্ষাকারী দুই দৈত্য ও ভুঁড়িপেট চ্যাম্পিয়নের মধ্যেও লড়াই আরম্ভ হইয়া গেল। মাঠে ও মাঠের বাহিরে দুইটি লড়াই যুগপৎ চলিতে লাগিল। সন্তোষ দত্ত বল কিক্ করিতে গিয়া স্বপক্ষের খেলোয়াড়ের নিতম্বে লাথি মারিয়া তাহাকে ভূমিশায়ী করিলেন, গোলের পিছনে দাঁড়াইয়া ক্ষিতীশদা অঙ্গভঙ্গীতে তাহার অনবদ্য অনুবাদ করিয়া দেখাইলেন। রবিবাবু একবার ডাহিনে একবার বামে হেলিতেছেন, বলের সঙ্গে যেন অদৃশ্যসূত্রে তিনি নাসিকাবদ্ধ—তাহারও নিখুঁত নকল ক্ষিতীশবাবু স্বীয় দেহে দেখাইয়া চলিলেন। এই অপূর্বদেহভঙ্গী দর্শকদের ‘মাগো, আর হাসিতে পারি না’ স্বীকারোক্তি নির্গত করিয়া ছাড়িল।

 এতো গেল নাট্যের নীরব দিক। ক্ষিতীশদা এই সঙ্গে গোলরক্ষক ও ব্যাকের সহিত সমান বাক্‌-যুদ্ধ চালাইতেছিলেন, যেন কর্ণের রথের শল্য-সারথি সমালোচনা

১৬০