এবং দাঁড়াইয়া দাঁড়াইয়া কাঁঁপিতেছে। চোখে চোখ পড়িতেই সানুনাসিক সুরে, ফণী নস্য ব্যবহার করিত, যাহা বলিল, তাহার চেয়ে ক্রন্দনও ভালো ছিল।
আমাকে দেখিয়াই ফণী বলিয়া উঠিল, “বাবা বলতেন, এত লোক মরে, আর এ ব্যাটা একেবারে অমর হয়ে জন্মেছে, যমেরও অরুচি। এত সয়েও টিকে গেছি। শেষে কিনা এখানে এ-ব্যাটা আস্ত যম হয়ে ঢুকেছে, আমাকে সাবাড় না করে ছাড়বে না।”
—“কার কথা বলছিস?”
—“আর কার কথা? তোমার গুণধর বন্ধুর কথা।”
কহিলাম, “কে? বিজয়?”
উত্তর হইল, “এ আবার জিজ্ঞেস করতে হয়।”
এখানে উল্লেখ থাকে যে, বিজয় শুধু আমারই নহে, ফণীরও গুণধর বন্ধু, স্কুলের ক্লাশ-থ্রি হইতেই আমাদের বন্ধুত্বের আরম্ভ।
জিজ্ঞাসা করিলাম, “কি হয়েছে?”
চটিয়া গিয়া উত্তর দিল, “কি হয়েছে? আজ যে গদার চোটে চ্যাপটা হইনি, সে আমার বরাত। এখানে আর এক দণ্ডও নয়। আজ ফসকেছে বলে যে কালও ফসকাবে, তার কি গ্যারাণ্টি আছে শুনি? অভ্যাসে হাতের তাক আরও পাকা হবে না?”
সম্মুখে দণ্ডায়মান ঘরের চাকরটির উপর দৃষ্টি পড়িতেই ফণী বলিল, “ও বাবা লালজী, তুম উধার খাড়া হ্যায় কাঁহে? এধারে আসতে নেহি পার? ধর না ব্যাটা, খাটটা ও কোণামে নিয়ে যাই।”
বলিয়াই আমার দিকে ফিরিল এবং কহিল, “আর তুইই বা ঠুঁটো জগন্নাথের মত দাঁড়িয়ে আছিস কোন আক্কেলে? গদা মারবার বেলা যত বন্ধু। ধর—”
কহিলাম, “কোথায় যাবি?”
১৯৩