পাতা:বক্সা ক্যাম্প.djvu/২০৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

 শুনিয়া বিজয় হো হো করিয়া হাসিয়া উঠিল। উপস্থিত সকলেও হাসিতে ফাটিয়া পড়িল।

 ফণী কহিল, “আবার হাসিস কোন্ আক্কেলে, লজ্জা করে না?”

 বিজয়ের কিন্তু লজ্জার কোন লক্ষণই দেখা গেল না। হাসিতে হাসিতেই স্থানত্যাগ করিল।

 ফণীকে কহিলাম, “খাট সত্যি সরাবি?”

 প্রশ্নটায় ঘৃতাহুতি পড়িল, সেকেণ্ড কয়েক তেরছা দৃষ্টিতে আমাকে দেখিয়া লইয়া তারপর চিবাইয়া চিবাইয়া কহিল, “কেন, ঠাট্টা বলে মনে হচ্ছে? যা কাজে যা। এই লালজী ধর।”

 উপেনবাবুও খাটের একধার ধরিয়া বলিলেন—“না, সরাই ভালো। জানে, আবার যদি ছোটে।”

 ফণী কহিল, “এর মধ্যে যদি নেই, যে পর্যন্ত আমার মাথাটা ছাতু না হয়, সে পর্যন্ত রোজ ফসকাবে, তুই দেখে নিস। প্রাণ নিয়ে জেল থেকে বেরুতে পারলে হয়।

 ফণীর খাটটা যথাস্থানে সরাইয়া দিয়া ফিরিয়া আসিতেই বিজয়ের মুখোমুখি পড়িয়া গেলাম।

 জিজ্ঞাসা করিল, “আজ মাঠের গেট কটায় খুলবে জানিস?”

 —“সাড়ে ছয়টায়।”

 —“যাই, মাঠে বেড়িয়ে আসি।” বলিয়া দরজার দিকে পা বাড়াইল।

 কহিলাম, “এই, কমলা পেলি কোথায়?”

 টাওয়েলের মধ্যে কয়েকটি কমলা জড়ানো, তাহার লাল রংটা বাহির হইয়া পড়িয়াছিল।

 উত্তর দিল, “তোকে তিনটে করে হাসপাতাল থেকে দিচ্ছে দুদিন যাবৎ।”

 —“কই, আমি তো জানি না।”

 —“ডাক্তারকে বলে আদায় করেছি। দুদিনের ছয়টা জমেছিল, মাত্র পাঁচটা নিলাম।”

১৯৫