পাতা:বক্সা ক্যাম্প.djvu/৪৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

 দূরে সরিবার কারণ ভূটিয়া কুলীরা। ভূটিয়ারাও মানুষ এবং আমাদের মতই মানুষ, এ-কথা অবশ্যই আমি স্বীকার পাইতে বাধ্য আছি। কিন্তু তাই বলিয়া তাদের জামা ও গায়ের গন্ধও নাক ভরিয়া শোষণ করিতে আমি বাধ্য থাকিব, ইহা কোন কাজের কথা নহে।

 শুনিতে পাই পাহাড়েও জল পাওয়া যায়। শোনা-কথার প্রয়োজন কি, আমাদের দেশে সমতল ভূমিতে যে-গুলি নদী, তাহারাই তো এদেৱ এখানে প্রথমে ঝরণা হইয়া নামে। মরুভূমির দেশের লোক নয়, তবু ইহারা স্নান করে না কেন? বরফ-গলা জলে শরীরে ঠাণ্ডা লাগিবার ভয়? বেশ, জামাগুলির তো প্রাণ নাই, ও-গুলিকে মাঝে মাঝে ময়লা ও গন্ধমুক্ত করিতে দোষ কি? প্রত্যেকেই যেন এক একটি ছোটখাটো চলন্ত গন্ধমাদন অথবা গন্ধর্ববিশেষ।

 বন্ধুরাও কাছে আসিয়া জমায়েত হইলেন। বেশী কথা বা বাদ-প্রতিবাদের মধ্যে না যাইয়া আমি সোজা জানাইয়া দিলাম যে, ঘোড়া ডাণ্ডীর অপেক্ষায় এখানে পড়িয়া থাকা চলিবে না, পায়ে হাঁটিয়াই যাইব। আমাদের মধ্যে নৃপেন মৈত্র নামক বহরমপুরের বছর আঠারোর একটি ছেলে ছিল, পথে তার একটু জ্বরভাব হয়। নৃপেনের জন্য একটি ঘোড়া রাখিয়া বাকীগুলি যেন ভাগাভাগি করিয়া লওয়া হয়, এই অনুরোধ জানাইলাম।

 তারপর দারোগাবাবুকে কহিলাম,—“আমরা যাচ্ছি কয়েকজন কুলী এগিয়ে গেছে, পথ ঠিক চিনতে পারব, আপনারা সব ঠিকঠাক করে পিছনে আসুন।”

 বলিয়া স্টেশনের বাহিরে আসিলাম, সঙ্গে সকলেই আসিলেন। আসিয়া দেখি পাঁচটি ঘোড়া আছে, ছ’ নম্বরটিকে দেখা যাইতেছে না। খবর লইয়া জানা গেল যে, রংপুর না বগুড়া হইতে আগন্তুক এক ভদ্রলোক তাহাতে চাপিয়া আগাইয়া গেছেন।

 লোকটির বুদ্ধির প্রশংসা না করিয়া পারিলাম না, গতিক তেমন সুবিধা

৪০